শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ৩১ মে, ২০২৫ (বাসস) : সকল শিশু ও নারীর ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে চট্টগ্রামে কর্মরত সংস্থাসমূহ।
সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে নারী ও শিশু, বিশেষ করে গৃহকর্মী শিশুদের অধিকার নিশ্চিত ও নির্যাতন প্রতিরোধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে।
এ সময় তারা চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে ২০১৯ সালে এনজিও কর্মকর্তা কর্তৃক শিশু গৃহকর্মী রহিমাকে (১৪) আটকে রেখে ধর্ষণ ঘটনার ন্যায় বিচার নিশ্চিতের দাবি জানায়।
আজ শনিবার (৩১ মে) চট্টগ্রামের প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে চট্টগ্রামে কর্মরত সংস্থাসমূহের আয়োজনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে চট্টগ্রামে কর্মরত সংস্থাসমূহের সমন্বয়কারী মাহাবুব-উল-আলমের পরিচালনায় মূল ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন অপরাজেয় বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম-এর প্রধান জিনাত আরা বেগম।
এ সময় শিশু গৃহকর্মী রহিমাসহ সকল শিশু ও নারী নির্যাতন মামলার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দাবিতে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এ কে এম নাজিম উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী মহিলা দল চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি এ্যাডভোকেট জান্নাতুল ফেরদৌস রিকু, বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও যুগান্তর সমাজ উন্নয়ন সংস্থা’র নির্বাহী পরিচালক ইয়াছমিন পরভিন, যুব সংগঠক এসডিজি ইয়ুথ ফোরামের সভাপতি নোমান উল্লাহ বাহার ও ব্র্যাক-এর জেলা প্রতিনিধি এনামুল হাছান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই চট্টগ্রামের চান্দগাঁও এলাকায় এক করুণ ঘটনার স্বীকার হয় ১৪ বছর বয়সী গৃহকর্মী শিশু রহিমা আক্তার।
মো. মাহাবুবর রহমান নামে একজন এনজিও কর্মকর্তা রহিমাকে তার বাসায় আটক রেখে ধর্ষণ করেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের জাতীয় চাইল্ড হটলাইন ১০৯৮-এ কল পেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চান্দগাঁও থানার পুলিশের সহযোগিতায় রহিমাকে আসামীর তালাবদ্ধ বাসা থেকে উদ্ধার করেন।
পরবর্তীতে, ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই রহিমার মা বিবি জহুরা চান্দগাঁও থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ সাক্ষ্য গ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে।
আয়োজকরা জানান, আমাদের গভীর উদ্বেগের বিষয় হলো, মামলার অভিযুক্তরা বিভিন্ন প্রভাব খাটিয়ে, ভুক্তভোগী পরিবারের ওপর ভয়ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথে বাঁধা সৃষ্টি করছে। আসামী প্রভাবশালী হওয়ায় মামলাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
তারা বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক পরিস্থিতির বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের সিভিল সোসাইটি, সাংবাদিক, শিক্ষক, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠন ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীবৃন্দ মানববন্ধন ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
আয়োজকরা সকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার জোর দাবি জানান।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল নেতা এ কে এম নাজিম উদ্দিন সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শিশুদের অধিকার নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট আইন অনুযায়ী বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা গেলেই বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব। শিশু রহিমার ধর্ষণ মামলার ন্যায় বিচার নিশ্চিত হলে, অন্য অপরাধীরা ভয় পাবে।’
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইয়াছমিন পরভিন সাংবাদিকদের জানান, ‘একজন ডেভেলপমেন্ট সেক্টরের মানুষের কাছ থেকে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা, সকল ডেলেভপমেন্ট সেক্টরের মানুষের জন্য লজ্জার। তাই এ ধরনের মামলার দ্রুত বিচারের মাধ্যমে অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত, যাতে অন্য কোন অপরাধীর এমন অপরাধ করার সাহস না হয়।’