বাসস
  ২৯ মে ২০২৫, ১৯:৪৩

নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগে বিএমইটিতে দুদকের অভিযান

ঢাকা, ২৯ মে, ২০২৪ (বাসস) : জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) অসাধু কর্মকর্তা ও বিভিন্ন এজেন্সির বিরুদ্ধে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে নারীদের বিদেশে পাচারের মাধ্যমে অবৈধ অর্থ অর্জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বৃহস্পতিবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানকালে টিম কর্তৃক সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা হয়। দৈবচয়নের ভিত্তিতে আবেদনকারী ও এজেন্সির কয়েকটি ফাইল পর্যালোচনায় ৮ জন ব্যক্তির দাখিলকৃত পাসপোর্টে উল্লিখিত রেফারেন্স পাসপোর্ট নম্বরে প্রার্থীর নাম সঠিক হলেও পারিবারিক বিবরণ ভিন্ন পাওয়া যায় যা জালিয়াতির মাধ্যমে করা হয়েছে বলে টিমের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।

এছাড়া, কয়েকটি পাসপোর্ট নম্বর যাচাইয়ে গৃহকর্মী হিসেবে গমনেচ্ছু কর্মীদের নির্ধারিত বয়স ২৫ বছরের কম, এমনকি তারা কিশোরী হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে ক্লিয়ারেন্স প্রদান করা হয়েছে বলে টিমের কাছে প্রাথমিকভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে।

আজ দুদকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এ সংক্রান্ত সকল রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে প্রাপ্ত অনিয়মসমূহের বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত চেয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। 

এদিকে, মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলাধীন সাহারবাটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ও ভূমি সংক্রান্ত অন্যান্য সেবা প্রদানে সেবাপ্রার্থীদের হয়রানি ও ঘুষ দাবি করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কুষ্টিয়া সম্মানিত জেলা কার্যালয় থেকে আরেকটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়।

অভিযানকালে ছদ্মবেশে ওই অফিস পরিদর্শন করা হয় এবং সরেজমিনে অভিযানে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তার পকেট থেকে বিভিন্নভাবে ভাঁজ করা অবস্থায় ৩৬ হাজার টাকা নগদ পাওয়া গেছে। এছাড়াও, ওই অফিসে সিটিজেন চার্টার না থাকাসহ বেশ কিছু অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

অভিযানকালে স্থানীয়দের বক্তব্যে জানা যায়, এই দপ্তরে ঘুষ বা অতিরিক্ত অর্থ ছাড়া কোনো কাজ হয় না। টিম সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর দপ্তর হতে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্র প্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যালোচনা করে কমিশনে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।

এদিকে, বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা প্রদানে হয়রানিসহ নানাবিধ অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত বরিশাল জেলা কার্যালয় থেকে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়।

অভিযানকালে স্টক রেজিস্টারে এন্ট্রিকৃত ওষুধের তুলনায় স্টোর রুমে কম পরিমাণ ওষুধ পাওয়া গেছে। রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত প্রতি পিস মুরগির মাংসের ওজন গড়ে ১০৫ গ্রাম বরাদ্দ থাকলেও সরেজমিনে পরিমাপে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ গ্রাম ওজন পাওয়া গেছে। প্রতি কেজি মুরগির জন্য ৩০০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি মূল্যের ব্রয়লার মুরগির মাংস রোগীদের সরবরাহ করা হয় মর্মে টিম তথ্য পেয়েছে। অধিকন্তু, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রেজিস্টারে ৫১ জন রোগী ভর্তি আছে মর্মে উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে মোট ১৬ জন রোগীকে ভর্তি অবস্থায় পাওয়া গেছে।

সার্বিক বিবেচনায় এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, স্টোরকিপার ও হাসপাতালের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারের পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন খাতে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযানকালে টিমের কাছে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়েছে।
এনফোর্সমেন্ট টিম এ সকল বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত চেয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করবে।