বাসস
  ২৮ মে ২০২৫, ১৮:৪২

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের মধ্যে ২২.৮ শতাংশ পথচারী 

প্রতীকী ছবি। ক্যানভা

ঢাকা, ২৮ মে ২০২৫ (বাসস): সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ২২.৮ শতাংশই পথচারী এবং ৪.২ শতাংশ সাইকেল আরোহী।

আজ বুধবার রাজধানীর বিআরটিএ সদর দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে ইউএন গ্লোবাল রোড সেফটি সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়। 

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় মতবিনিময় সভাটির আয়োজন করে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)।

সম্প্রতি দেশে পরিচালিত এক গবেষণার বরাত দিয়ে জানানো হয়, আহতরা যথাক্রমে ১১ ও ৯ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং প্রতি রোগীর জন্য চিকিৎসা ব্যয় হয় গড়ে ২৭ হাজার ৫৩২ টাকা ও ১৮ হাজার ৯৫২ টাকা।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান মো. ইয়াসীন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআরটিএ’র রোড সেফটি উইং-এর পরিচালক শীতাংশু শেখর বিশ্বাস। 

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন পরিচালিত রোড সেফটি অ্যান্ড ইনজুরি প্রিভেনশন প্রোগ্রামের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ওয়ালী নোমান।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী রোডক্র্যাশ মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। প্রতি বছর প্রায় ১২ লাখ মানুষ সড়কে প্রাণ হারান এবং প্রায় ৫ কোটি মানুষ আহত হন। ৫ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণদের মৃত্যুর প্রধান কারণও এটি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বে পথচারী মৃত্যুর হার বেড়েছে ৩ শতাংশ এবং সাইকেল আরোহীদের ক্ষেত্রে এ হার বেড়েছে ২০ শতাংশ। অথচ বিশ্বের ৮০ শতাংশ সড়কে পথচারীদের জন্য কোনো নিরাপদ অবকাঠামো নেই এবং মাত্র ০.২ শতাংশ রাস্তায় রয়েছে সাইকেল লেন।

এ পরিস্থিতিতে, জীবন বাঁচাতে ও সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘সেফ সিস্টেম অ্যাপ্রোচ’ একটি কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। ইউরোপে এ পদ্ধতির বাস্তবায়নে মৃত্যুহার ৩৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সুইডেনে প্রতি লাখে মৃত্যুহার মাত্র ২.৮।

সভায় সম্মানিত আলোচক হিসেবে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, ‘শহরে দুর্ঘটনা কমাতে যানবাহনের গতিসীমা নির্ধারণ অত্যন্ত জরুরি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও যথাযথ আইন প্রণয়নের মাধ্যমেই ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব।

সভাপতির বক্তব্যে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একযোগে কাজ করতে হবে। বিআরটিএ ইতোমধ্যে ‘মোটরযান গতিসীমা নির্দেশিকা ২০২৪’ জারি করেছে এবং সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি কোঅর্ডিনেটর ড. মো. শরিফুল আলম, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি শরিফুল ইসলামসহ বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর জাতিসংঘের উদ্যোগে পালিত হয় ‘ইউএন রোড সেফটি সপ্তাহ’। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘পথচারী ও সাইকেল আরোহীদের জন্য নিরাপদ সড়ক’।