শিরোনাম
ঢাকা, ২৬ মে ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশে যতদিন পর্যন্ত গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা না হবে গণমাধ্যম ততোদিন স্বাধীন হবে না। কারণ, অগণতান্ত্রিকভাবে যারা ক্ষমতায় থাকে তারা মিডিয়াকে চাপে রাখে।
তিনি বলেন, বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘যদিও মিডিয়া সরাসরি জবাবদিহিতা করে না, তবে মিডিয়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ জবাবদিহিমূলক প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে। তারাও জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। সরকারের জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে মিডিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আজ সোমবার শীর্ষনিউজের নতুন কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু এসব কথা বলেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শীর্ষনিউজের সম্পাদক একরামুল হক।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পেছনে কারো একার কৃতিত্ব নেই উল্লেখ করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এক্ষেত্রে শীর্ষনিউজের সম্পাদক একরামুল হকের মতো নির্যাতিত সাংবাদিক, বন্ধ হয়ে যাওয়া গণমাধ্যম, রাজনীতিবিদ, পঙ্গুত্ববরণকারী, আহত-নিহত ছাত্র-জনতাসহ অনেকের অবদান রয়েছে। এসব অবদানের স্বীকৃতি দিতে হবে, কৃতিত্ব দিতে হবে। তবেই সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা সম্ভব হবে।
আমীর খসরু বলেন, ‘অগণতান্ত্রিকভাবে যেই সরকার ক্ষমতায় থাকুক না কেন, একটা পর্যায়ে গিয়ে তারা টিকে থাকার জন্য এবং ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য মিডিয়াকে চাপের মধ্যে রাখতে চায়- এটা আমাদের স্বীকার করতেই হবে। সুতরাং আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে গণতন্ত্রের পক্ষে, আমাদের ঐক্য হতে হবে গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য। যার মধ্যে মিডিয়ার স্বাধীনতাও অন্তর্নিহিত। এর কোনো বিকল্প নেই।’
আমীর খসরু বলেন, ‘আমরা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। এই প্রক্রিয়া যত দেরি হবে, আমাদের সংকট তত গভীর হবে। বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য গণতান্ত্রিক অর্ডার যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে আনতে হবে। মিডিয়ার সহযোগিতা ও জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আমরা যদি সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি এটাই আমাদের জন্য সর্বাধিক লাভজনক হবে।’
‘আগামী দিনে গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই সাবেক মন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তনের জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমরা একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাই। এই প্রক্রিয়ায় যত দেরি হবে, ততই আমাদের সংকট আরও গভীর হবে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব ইসমাইল জবিউল্লাহ, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা কেক কেটে শীর্ষনিউজের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এটি শীর্ষনিউজের চতুর্থবারের মতো কার্যক্রম শুরুর অনুষ্ঠান। এর আগে কয়েকবার বন্ধ করে দেওয়া হয় এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন, দুর্নীতি ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লাগাতার জোরালো ভূমিকা রাখতে গিয়ে প্রথম দফায় ২০১১ সালে সরকারের রোষানলে পড়ে সম্পাদক গ্রেফতার হন।
এক পর্যায়ে শীর্ষনিউজ ডটকম ও সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ‘সংবাদ পরিবেশনার সকল ধারণা পাল্টে দেয়া’র স্লোগানকে সামনে রেখে ২০০৯ সালে শীর্ষনিউজের যাত্রা শুরু হয়।