বাসস
  ০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:৫৫

অবৈধ মাছ ধরা মোকাবেলায় বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে: মৎস্য উপদেষ্টা

আজ সকালে চট্টগ্রামের দ্য পেনিনসুলা হোটেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেসের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ছবি: বাসস

ঢাকা, ২ ডিসেম্বর, ২০২৫(বাসস) : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন- জলবায়ু পরিবর্তন ও  অবৈধ, অপ্রকাশিত এবং অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরা একক দেশের পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এজন্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতা জোরদার করতে হবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বাংলাদেশের টেকসই সামুদ্রিক উন্নয়ন, ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়ন এবং বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন পরিস্থিতিতে সমুদ্রের গুরুত্ব তুলে ধরে কার্যকর সুশাসন ও বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। 

আজ সকালে চট্টগ্রামের দ্য পেনিনসুলা হোটেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস  আয়োজিত ‘মেরিন ফিশারিজ অ্যান্ড ব্লু ইনোভেশনস : সেইফগার্ডিং ওশান হারমনি’ -শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হলো— ‘সেইফগার্ডিং ওশান হারমনি’।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে ঠিকই, তবে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে দায়িত্বশীল আহরণ, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, বিজ্ঞানভিত্তিক সিদ্ধান্ত এবং কার্যকর সুশাসন অত্যন্ত জরুরি। তিনি আরো বলেন, ব্লু ইকোনমিকে জাতীয় অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করায় বিজ্ঞাননীতি কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সমন্বয়ে একটি টেকসই সামুদ্রিক ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ‘ড. ফ্রিটজফ নানসেন’ কর্মসূচির ২০২৫ সালের সামুদ্রিক জরিপ অনুযায়ী, গত সাত বছরে ছোট পেলাজিক মাছের মজুদ ১,৫৮,০০০ টন থেকে কমে ৩৩,৮১১ টনে নেমে এসেছে, যা ৭৮.৬% হ্রাস। বড় শিকারী মাছ কমে যাওয়ায় জেলিফিশের আধিক্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য বিপজ্জনক সংকেত। তিনি বলেন, এসব ফলাফল বঙ্গোপসাগরের ইকোসিস্টেমে দ্রুত হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তার ইঙ্গিত দেয়।

উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে অত্যন্ত দক্ষ গবেষক ও বিজ্ঞানী আছেন। নীতিনির্ধারণে তাদের গবেষণালব্ধ তথ্য প্রাধান্য দিতে হবে। এসময় তিনি ইকোসিস্টেম সুরক্ষা, সমুদ্র ভিত্তিক  পরিকল্পনা এবং জলবায়ুুসহনশীল মৎস্য ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দেন।

ইলিশকে জাতীয় ও বৈশ্বিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন—ইলিশ আহরণে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষে, কিন্তু এই সম্পদ এখন হুমকির মুখে। সাগরের প্রতিটি স্তরে ইলিশ রক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য করেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। প্লেনারি সেশনে ‘গ্লোবাল ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়ন : চ্যালেঞ্জ, অভিজ্ঞতা এবং  বাংলাদেশের জন্য কৌশলগত অন্তর্দৃষ্টি’- শীর্ষক বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব পোর্টসমাউথের বিজনেস স্কুলের প্রফেসর ড. পিয়ের ফাইলার।  বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য করেন- মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ মেরিন সায়েন্সের পরিচালক ড. শেখ আফতাব উদ্দিন আহমেদ। এসময় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি, গবেষক, বিজ্ঞানী, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিনিধি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।