বাসস
  ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:০৮
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:১৪

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ-অধ্যাপক ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

ঢাকা, ১৩ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষরিত জুলাই সনদকে মূল দলিল হিসেবে ধরে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার আজ বৃহস্পতিবার উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ, ২০২৫ অনুমোদন করেছে। এটি বিরাট খবর। প্রয়োজনীয় স্বাক্ষর শেষে এটি ইতোমধ্যে গেজেট নোটিফিকেশন করার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

আজ জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই আদেশে আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিধান গ্রহণ করেছি। এর মধ্যে রয়েছে সনদের সংবিধান বিষয়ক সংস্কার প্রস্তাবনার ওপর গণভোট অনুষ্ঠান এবং পরবর্তী সময়ে সংবিধান সংস্কার পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত।’ 

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের প্রস্তাব তৈরির লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন নিরলসভাবে গত প্রায় নয় মাস ধরে কাজ করেছে। এসময় কমিশন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা করেছে। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে ধৈর্য্যসহকারে রাজনৈতিক দলগুলো কমিশন কর্তৃক উত্থাপিত বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। মতের পার্থক্য থাকলেও তা কমিয়ে আনার চেষ্টা করেছেন। অনেক বিষয়েই ঐকমত্যে আসতে পেরেছেন। সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে এই পুরো কার্যক্রম দেশবাসী দেখতে পেরেছেন।

এটি বাংলাদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে তো বটেই, বিশ্বের অনেক দেশের জন্য এক অভূতপূর্ব ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন,‘ এটি ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্যও আশাব্যঞ্জক’।

তিনি ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নেতৃবৃন্দকে গণতান্ত্রিক চর্চার এই আসাধারণ আয়োজনকে সফল করায় আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ঐকমত্য কমিশনের প্রণীত জুলাই সনদে সংবিধান বিষয়ক ৩০টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। এটি একটি ঐতিহাসিক অর্জন। কিছু প্রস্তাবে সামান্য ভিন্নমত আছে। বাকি অল্প কিছু প্রস্তাবে আপাতদৃষ্টে মনে হয় অনেক দূরত্ব আছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে খতিয়ে দেখলে দেখা যায় যে, এসব প্রস্তাবগুলোর ক্ষেত্রেও আসলে মতভিন্নতা খুব গভীর নয়। কেউ সংস্কারটা সংবিধানে করতে চেয়েছেন, কেউ আইনের মাধ্যমে করতে চেয়েছেন। কিন্তু সংস্কারের প্রয়োজনীতা, নীতি ও লক্ষ্য নিয়ে কারো মধ্যে মতভেদ নেই। কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর প্রকাশ্য বক্তব্য যতখানি পরস্পর বিরোধী অবস্থান আছে বলে মনে হয়, জুলাই সনদ সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করলে ততখানি মত পার্থক্য দেখা যায় না। এটি আমাদের অনন্য অর্জন। এতে জাতি এগিয়ে যেতে সাহসী হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।