বাসস
  ০৩ জুন ২০২৫, ১৫:১৪
আপডেট : ০৩ জুন ২০২৫, ১৫:৫২

আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো চলুক : রিজভী

বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: বাসস

ঢাকা, ৩ জুন, ২০২৫ ( বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ( বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘আমরা চাই বাংলাদেশ ভালো চলুক। দেশে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক।’

জাতীয়তাবাদী তাঁতী দল আজ মঙ্গলবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দুস্থদের মাঝে ঈদ সামগ্রী বিতরণের আয়োজন করে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দেয়া বাজেট সম্পর্কে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সরকার ৭ লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে। এর সাথে শেখ হাসিনার বাজেটের পার্থক্য কি বলুন? এই বাজেটের ২৩ শতাংশের বেশি যাবে শুধুমাত্র প্রশাসনের বেতনের জন্যে। আর সুদের টাকা যাবে ১৪ শতাংশ। তাহলে গরিব মানুষের জন্য কি রাখা হয়েছে?  প্রশ্ন রাখেন রিজভী।

রিজভী বলেন,‘স্বাস্থ্য খাতে, শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কম। কিন্তু আমাদের তো বেশি দরকার স্বাস্থ্য খাত ও শিক্ষা খাতে। সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা তো সরকারই দেখবে। যদি শিক্ষা,স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ কম থাকে তাহলে মানুষের কল্যাণে যে লড়াই ১৫ বছর ধরে হয়েছে, সর্বশেষ জুলাই আগস্টে ছাত্র-জনতা আত্মাহুতি দিয়েছে, শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে, তার কোনো মূল্য থাকলো না। এই বাজেট গরীবকে আরো গরীব করবে। মধ্যবর্তী ও নিম্ন মধ্যবর্তী মানুষের চাপ আরো বাড়বে।

বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট  জিয়াউর রহমানের বিভিন্ন স্মৃতি তুলে ধরে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জিয়াউর রহমানকে শুধু নেতা বললে হবে না, তিনি যুগ সৃষ্টিকারী নেতা। জনগণ তাকে নাম দিয়েছে ‘রাখাল রাজা’। তিনি মাইলের পর মাইল হেঁটে জনগণের দুর্দশা উপলব্ধি করেছেন। তিনি অনেক ভালো ভালো কর্মসূচি নিয়েছেন। জিয়াউর রহমান জাতির ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান এমন সময় ক্ষমতায় এসেছেন একদিকে রাজনৈতিক সংকট এবং অন্যদিকে অর্থনৈতিক সংকট। ৭৪ এর দুর্ভিক্ষের সময় ক্ষুধা-দারিদ্র্যে মানুষ এক মুঠো ভাত পায়নি। এসকল বিপর্যয়কর পরিস্থিতির পরে তিনি ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি এসব প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে খাদ্যের উৎপাদন, মাছের উৎপাদন বাড়াতে সারাদেশে খাল খনন করেছেন। খাদ্য উৎপাদনের জন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। অল্প সুদে তিনি ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ দেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছেন। এভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে গোটা জাতিকে তিনি একটা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছেন।

জিয়াউর রহমান মানুষের কাছে একজন অনুকরণীয় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, তাকে দেশ বিদেশের আন্তর্জাতিক শক্তি যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে পছন্দ করেনি তাদের ষড়যন্ত্রে হত্যা করা হলো। তিনি কেন নিজ দেশকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেষ্টা করছেন, দেশকে কেন স্বাবলম্বী করছেন, কেন দেশকে গণতন্ত্র দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের নমুনা শেখ হাসিনার আমলে দেখেছি, তার বাপের আমলেও তা-ই ছিল। সে আইন করেছে, কালাকানুন অনেক করেছে। কিন্তু মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছিল না। যারা কিছুটা মত প্রকাশ করেছেন, তাদের ঠিকানা হয়েছে কারাগারে। এর ব্যতিক্রম ছিল বিএনপির আমল। বিএনপি আমলে যে কোনো মানুষ নির্বিঘ্নে মত প্রকাশ করতে পারতো। গণতন্ত্রের নিশ্চয়তার দল হচ্ছে বিএনপি।

তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপুসহ সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।