শিরোনাম

রাজশাহী, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পরিযায়ী পাখি ও তাদের আবাসস্থল দূষণমুক্ত রাখতে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজশাহীতে আজ অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় তারা পাখি শিকার ও পাচার রোধে বিদ্যমান আইন আরও কঠোরভাবে প্রয়োগ এবং শিকারিদের গ্রেফতারে স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
নগরীর খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের সম্মেলন কক্ষে ‘জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে করণীয় শীর্ষক’ এ কর্মশালার আয়োজন করে নেচার অ্যান্ড বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশন ফোরাম (এনবিসিএফ)।
কর্মশালায় নগর ও গ্রামীণ এলাকাকে কীভাবে পরিযায়ী পাখির জন্য আরও উপযোগী আবাসস্থলে রূপান্তর করা যায়, সে ব্যাপারে আলোচনা করা হয়। এ জন্য নগর পরিকল্পনায় উন্নয়ন, দূষণ হ্রাস ও আলোকদূষণের মতো হুমকি কমানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মানুষ ও পাখি একই পরিবেশে নিরাপদে টিকে থাকতে পারে-এমন সহাবস্থান নিশ্চিত করাই এ কর্মশালার লক্ষ্য।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস এবং ভেটেরিনারি ও প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জালাল উদ্দিন সরদার কর্মশালায় মূল বক্তা হিসেবে বিষয়ভিত্তিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।
এছাড়া, বাংলাদেশ বেতারের পরিচালক হাসান আখতার, এনবিসিএফ-এর সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ এবং খ্রীষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রদীপ চন্দ মণ্ডলও বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিসিএফ-এর সভাপতি অধ্যাপক বি কে দাম।
আলোচনায় পরিযায়ী পাখির প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, বীজ বিস্তার, পুষ্টি চক্র বজায় রাখা ও পরাগায়ণে পরিযায়ী পাখির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
পাখিদের টিকে থাকা ও প্রজনন নিশ্চিত করতে নিরাপদ আশ্রয়স্থল ও সুরক্ষিত উদ্যান তৈরির ওপর জোর দেওয়া হয়।
অধ্যাপক বিধান চন্দ্র দাস আলোক ও প্লাস্টিক দূষণ পরিযায়ী পাখি ও তাদের আবাসস্থলের ওপর কীভাবে প্রভাব ফেলে তা তুলে ধরেন। তিনি প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সময়োপযোগী ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, পরিযায়ী পাখির নিরাপদ বসবাস ও প্রজনন নিশ্চিত করতে সুরক্ষিত উদ্যান তৈরি করা জরুরি।
অধ্যাপক জালাল উদ্দিন সরদার বলেন, বাংলাদেশে স্থানীয় ও পরিযায়ী মিলে প্রায় ৭১০ প্রজাতির পাখি রয়েছে, যার মধ্যে ৬৫০ প্রজাতিকে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বছরের নির্দিষ্ট সময়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হওয়া পাখিকে পরিযায়ী পাখি বলা হয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এসব পাখির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এর আগে, জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে পাখি শিকার প্রতিরোধে বিশেষজ্ঞরা টি-বাঁধ ও শ্রীরামপুর এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন।