শিরোনাম

গাইবান্ধা, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ (বাসস): ২০৩০ সালের মধ্যে ফিস্টুলামুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রসূতি ফিস্টুলা রোগীদের প্রাথমিকভাবে শনাক্তকরণের প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। জেলা সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ফিস্টুলা রোগী শনাক্তকরণ সম্পর্কিত এক অ্যাডভোকেসি সভায় বক্তারা আজ ফিস্টুলা রোগী শনাক্তকরণের ওপর বিশেষ জোর দেন।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘প্রসূতি ফিস্টুলা হল সবচেয়ে গুরুতর এবং মর্মান্তিক প্রসবকালীন আঘাতের মধ্যে একটি। জন্ম নালি এবং মূত্রাশয় অথবা মলদ্বারের মধ্যে একটি গর্ত। এটি দীর্ঘস্থায়ী। বাধাগ্রস্ত প্রসবের কারণে এ রোগের সূচনা হয়। সময়মতো এবং উচ্চমানের চিকিৎসার সুযোগ না পাওয়ায় এ রোগ জটিল আকার ধারণ করে।’
সভায় জানানো হয়, দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলায় অবস্থিত ল্যাম্ব (খঅগই) হাসপাতালে প্রসূতি ফিস্টুলা রোগীদের অনুসন্ধান এবং রেফারেলের কাজ করে। ফিস্টুলা শনাক্ত হওয়ার পর রোগীদের সরকারি হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ)বাংলাদেশের অর্থায়নে ‘এলিমিনেশন অব জেনিটাল ফিস্টুলা বাই ক্যাপচারিং ট্রিটমেন্ট, রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড রিইনটিগ্রেটিং ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের অধীনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সিভিল সার্জন ডা. রফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা. মো. শহীদুল্লাহ এবং পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. তরিকুল ইসলাম রিসোর্স পারসন হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ইউএনএফপিএ বাংলাদেশের ফিল্ড অফিসার ডা. মো. শাহীন আক্তার অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
ডা. মো. শাহীন আক্তার বলেন, ‘রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে গাইবান্ধা জেলায় ১৭৪ জন ফিস্টুলা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের সবাই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রোগ থেকে সেরে উঠেছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় বেশ কয়েকজন দরিদ্র রোগীকেও আনা হয়েছে যাতে তারা আয়বর্ধক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হয়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারেন এবং কষ্ট ছাড়াই তাদের পরিবার পরিচালনা করতে পারেন।’
বক্তারা প্রসূতি ফিস্টুলা রোগ এড়াতে হোম ডেলিভারির পরিবর্তে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি নিশ্চিত করার উপর জোর দেন। যেহেতু প্রসূতি ফিস্টুলা রোগীরা মেরামতের মাধ্যমে রোগ থেকে সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য লাভ করে, তাই জেলা থেকে এই ধরনের রোগী শনাক্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিস্টুলামুক্ত জেলা গড়ে তোলার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ ল্যাম্ব হাসপাতাল কর্তৃক প্রদত্ত চিকিৎসা সুবিধার আওতায় আনার উপর জোর দেওয়া উচিত।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদার রহমান, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল জলিল, গাইনি পরামর্শদাতা ডা. তাহেরা আক্তার মনি, সাংবাদিক সরকার শহীদুজ্জামান এবং ল্যাম্ব হাসপাতালের জেলা ফ্যাসিলিটেটর শরিফুল ইসলাম শরীফ বক্তব্য রাখেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, গাইনি পরামর্শদাতা, মেডিক্যাল অফিসার, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।