বাসস
  ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩:২৫

সোনালি ফসলে স্বস্তির হাসি বগুড়ার আমন চাষীদের মুখে

বগুড়ার আমন চাষীদের মুখে স্বস্তির হাসি । ছবি : বাসস

কালাম আজাদ

বগুড়া, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ভালো ফলন ও ন্যায্য দামে আমন ধান বিক্রি করতে পারায় বগুড়ায় আমন চাষে নতুন উদ্দীপনা দেখা গেছে। চলতি মৌসুমে কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ায় অতিরিক্ত সেচের প্রয়োজন হয়নি। ফলে উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি ফলনও হয়েছে সন্তোষজনক। জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখন ধান কাটা-মাড়াইয়ের ব্যস্ত সময় চলছে। মাঠের চারদিকে সোনালি ধানের সমারোহে মুখে হাসি ফুটেছে কৃষকদের।

বগুড়ার সদর, শেরপুর, শিবগঞ্জ, নন্দীগ্রাম, গাবতলী, ধুনটসহ প্রায় সব উপজেলায় আমন ধানের চাষ হয়ে থাকে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে সেপ্টেম্বরের শুরুর দিক পর্যন্ত ধান রোপণ করা হয়। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ধান কাটার মৌসুম।

এ সময় মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা কেউ কাস্তে হাতে ধান কাটছেন, কেউ মাড়াই মেশিনে ফসল দিচ্ছেন। মাঠের পাশে ধান শুকানোর চিত্রও দেখা যায়। ব্যস্ততার মাঝেও কৃষকদের চোখেমুখে স্বস্তির আভা।

কৃষকদের দাবি, কয়েক দফা বৃষ্টির কারণে এবার জমি নরম ছিল, তাই সেচের জন্য বাড়তি খরচ করতে হয়নি। উচ্চফলনশীল জাতের বীজ সরবরাহও ফলন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। মৌসুমের শেষ দিকে বৃষ্টিতে কিছু ধান নুয়ে পড়লেও ক্ষতি তুলনামূলক কম।

রফিকুল ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন, গত দুই বছরের চেয়ে এবার ধান অনেক ভালো হয়েছে। ঠিক সময় মতো বৃষ্টি হওয়ায় সেচে খরচ কমেছে। বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ মন পর্যন্ত ধান উঠছে। ফলন ভালো হওয়ায় ঘরের খরচও চলবে, আবার ধারদেনাও শোধ করা যাবে।

কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, শেষ দিকের বৃষ্টিতে কিছু ধান নুয়ে পড়েছিল ঠিকই, কিন্তু ফলনে তেমন ক্ষতি হয়নি। বাজারে দামও মোটামুটি আছে। তাই এবার মনে শান্তি আছে।

কৃষক শাহাদত হোসেন জানান, এক বিঘা ধান চাষে আমাদের ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। এবার বিঘাপ্রতি ১৬ থেকে ৩০ মন ধান পাওয়া যাচ্ছে। কৃষি বিভাগের দেওয়া উন্নত বীজ ব্যবহার করার ফলে ফলন ভালো হয়েছে।

বগুড়া জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বগুড়ায় ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। এখান থেকে ৯ লাখ ৯১ হাজার ৯১৭ টন ধান এবং চাল আকারে ৬ লাখ ৬১ হাজার ২৭৮ টন উৎপাদনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপপরিচালক কৃষিবিদ সোহেল মো. শামসুদ্দীন ফিরোজ বলেন, মৌসুমের শেষে বৃষ্টিতে কিছু ধান নুয়ে পড়লেও ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। মাঠ পর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আমরা আশা করছি।