বাসস
  ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩১
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:০০

বাংলা সাহিত্যে মধ্যবিত্ত জীবনের উপস্থিতি কম : মাহবুব মোর্শেদ

শনিবার চট্টগ্রাম বাতিঘরে ‘কথাসাহিত্য নিয়ে’ শীর্ষক সাহিত্য আড্ডায় বক্তব্য দেন বাসসের এমডি ও কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ। ছবি : বাসস

চট্টগ্রাম, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলা সাহিত্যে আরবান মিডল ক্লাসের (মধ্যবিত্ত জীবনের) উপস্থিতি এখনও কম এবং খুব কম লেখকই এই ধারায় নিয়মিত লেখেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক এবং কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ।

গতকাল শনিবার রাতে চট্টগ্রাম বাতিঘরে ‘কথাসাহিত্য নিয়ে: মাহবুব মোর্শেদ’ শীর্ষক এক সাহিত্য আড্ডায় তিনি বলেন, ‘আমার ছোটগল্প ও দীর্ঘ ফিকশন— দুই ক্ষেত্রেই আমি চেষ্টা করেছি এই দৃষ্টিভঙ্গিগুলো তুলে ধরতে। কিন্তু লক্ষ্য করেছি, আমাদের সাহিত্য সমালোচনার যে প্রচলিত ধারা, যারা সাহিত্যকে মূল্যায়ন করেন, তারা সাধারণত এসব বিষয় খুব একটা পছন্দ করেন না।’

মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ‘আমাদের অধিকাংশ লেখক ইতিহাসভিত্তিক, ইউটোপীয়, কিংবা জেলে-শ্রমিক-কৃষক কেন্দ্রিক, অর্থাৎ নন্দনতাত্ত্বিক মার্কসবাদী ধারার লেখাকেই বেশি গুরুত্ব দেন। মূলত এই ধরনের লেখাকেই বেশি অ্যাপ্রিশিয়েট (প্রশংসা) করা হয়। তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। আমার মনে হয়, নিজের শ্রেণি, নিজের অভিজ্ঞতা এবং জীবনযাপনের বাস্তবতাকে এড়িয়ে না গিয়ে, বরং সেটাকে সাহিত্যিক বিষয় করে তুলতে পারলেই সাহিত্য তার মূল কাজটা করতে পারে।’

নিজের লেখালেখি প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘ফেস বাই ফেস’, ‘অর্ধেক জাগ্রত রেখে’, ‘তোমারে চিনি না আমি’ এবং ‘বুনো ওল’ নামে তার চারটি উপন্যাস রয়েছে।

‘মিনোল্টা ম্যাক্সাম’ নামে একটি রহস্যোপন্যাসও লিখেছেন তিনি। এছাড়া, তার ‘ব্যক্তিগত বসন্তদিন’, ‘দেহ’, ‘সন্দেহ’ এবং সর্বশেষ ‘বাসনা বিলাস’ নামে গল্পের বইও আছে।

মাহবুব মোর্শেদের প্রকাশিত দু’টি কবিতার বই হল— ‘অরব বসন্ত’ (যেটিকে ভুল করে অনেকে আরব বসন্ত মনে করেন) এবং ‘অপ্রকাশিত জীবনানন্দ’।

অপ্রকাশিত জীবনানন্দ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বইটি জীবনানন্দ দাসের অপ্রকাশিত কবিতার সংকলন নয়; বরং জীবনের অপ্রকাশিত আনন্দ।’

একজন পাঠকের প্রশ্নের উত্তরে নিজের লেখালেখির বিষয়বস্তু সম্পর্কে কথাসাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ বলেন, ‘আমার লেখার বিষয় আসলে আমাদের আরবান মিডল ক্লাসের জীবন। আমি, আপনি, আমরা যে জীবন যাপন করি, সেই অভিজ্ঞতাই আমার গল্প, উপন্যাস বা ফিকশনের সাবজেক্ট।’

আলোচনায় তিনি বাংলা সাহিত্যে মধ্যবিত্ত জীবনের ব্যক্তিগত সংকট, সিদ্ধান্তহীনতা, দ্বৈততা, সম্পর্কের জটিলতা এবং তাদের উপস্থিতি কেন জরুরি, এ বিষয়গুলোও তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কবি স্বরূপ সুপান্থ। এসময় বাতিঘরের স্বত্বাধিকারী ও প্রকাশক দীপংকর দাশ, লেখক শোয়াইব হাসান, রিয়াজ মোরশেদ সায়েম, কবি সিবগাতুল্লাহ, ওয়াসিম হাসান মাহমুদ ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।