শিরোনাম

জীতেন বড়ুয়া
খাগড়াছড়ি, ১০ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস): জেলা সদর থেকে সাজেকগামী খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা- সাজেক সড়কে দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হতে চলেছে। ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কটি আরও ছয়ফুট প্রশস্ত করা হচ্ছে। এতে সড়কটি ১৮ ফুট চওড়া হবে। এজন্য ৩৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়ক সংস্কার কাজ হাতে নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ইতোমধ্যে সড়কটি সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরু ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁকের কারণে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা-সাজেক সড়কটিতে প্রতিনিয়ত ঘটতো দুর্ঘটনা। সাজেক পর্যটক কেন্দ্র সহ দীঘিনালা, বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার বাসিন্দারা এই পথে যাতায়াত করেন। কিন্তু ১২ ফুট প্রশস্ত ও ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কে বাঁক রয়েছে ৫২টি। ভৌগোলিক গঠনের কারণে খাগড়াছড়ির অধিকাংশ সড়ক আঁকাবাঁকা। ১৯৮০’র দশকে নির্মিত এসব সড়ক অপ্রশস্ত হওয়ায় যান চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হয়। উঁচু-নিচু সরু সড়কে ট্রাক, বাস ও পর্যটকবাহী যানবাহন চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা। সাজেকগামী পর্যটকবাহী যানবাহন এ সড়কে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে। সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ায় বেড়েছে ভোগান্তিও। যার কারণে আঁকাবাঁকা সরু সড়কে যাতায়াতে সময় লাগে বেশি।
দীঘিনালার নয়মাইল এলাকার বাসিন্দা ও সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য গণেশ ত্রিপুরা জানান, এই সড়কটি অপ্রশস্ত হওয়ার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘরে। অনেকসময় গাড়ি উল্টে খাদে পড়ে যায়। এছাড়া একটি গাড়িকে ক্রস করার মতো পর্যাপ্ত জায়গা রাস্তায় নেই। বাঁক ও উচু-নিচু সড়কের কারণে বাঁশ ও কাঠ বোঝাই ট্রাক প্রায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। উল্টে যায় যাত্রীবাহী বাসও। সড়কটি বড় হলে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হবে।
চান্দের গাড়ির (জিপ) চালক প্রদীপ ত্রিপুরা ও নিমাই দেবনাথ জানান, ১৮ কিলিমিটার সড়কে বাঁক আছে ৫০ টির বেশি। যাতায়াতের সময় লাগে ৪০ মিনিট থেকে একঘণ্টারও বেশি। এই সড়কে জেলার অন্যান্য সড়কের তুলনায় যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেশি থাকে।
খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ -এর সভাপতি মো. আসলাম কালু বলেন, জেলায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। সাধারণত জেলা পর্যায়ের আঞ্চলিক মহাসড়ক ১৮ ফুট প্রশস্ত হওয়ার কথা থাকলেও এই সড়কের প্রশস্ততা মাত্র ১২ ফুট। সড়কে অতিরিক্ত বাঁকের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তা প্রশস্ত হলে বাঁকের পরিমাণ কমে আসবে। তাতে চালকেরা গাড়ি চালিয়ে স্বস্তি পাবেন, দুর্ঘটনাও কমে আসবে।
খাগড়াছড়িতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, জেলা সদরের খাগড়াপুর থেকে দীঘিনালা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি প্রশস্তকরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে, ইতোমধ্যে রাস্তার কাজও শুরু হয়েছে। সড়কটি সম্প্রসারণের কাজ চলছে বিধায় যানবাহন চলাচলে সাময়িক অসুবিধা হতে পারে।
তিনি জানান, দুইপাশে প্রশস্ত করে সড়কটি ১৮ ফুট প্রশস্ত করা হবে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ২০২৬ সালের মার্চ মাস নাগাদ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।