বাসস
  ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৩১

কক্সবাজার বিমানবন্দরকে দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘোষণা

ঢাকা, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে ঘোষণা করেছে, যা বাংলাদেশের বিমান পরিবহন ও পর্যটন উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সংখ্যা দাঁড়ালো চারটিতে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে রোববার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আহমেদ জামিলের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘দ্য সিভিল অ্যাভিয়েশন রুলস, ১৯৮৪’-এর ১৬ নং বিধির উপ-বিধি (১) অনুসারে ক্ষমতাবলে সরকার কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। 

জনস্বার্থে জারিকৃত এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি মাসের শেষের দিকে ‘সফট লঞ্চ’-এর অংশ হিসেবে কক্সবাজার থেকে সীমিত পরিসরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হবে। চলমান অবকাঠামোগত উন্নয়নের পর পূর্ণাঙ্গ পরিষেবা চালু করা হবে।

কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় পতাকাবাহী বিমান পরিবহন সংস্থা ‘বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স’ ইতোমধ্যেই ঢাকা হয়ে কক্সবাজার-কলকাতা-কক্সবাজার রুটে তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা করেছে, যা আঞ্চলিক যোগাযোগ ও পর্যটন খাতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাসসকে বলেন, কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর  ঘোষণা জেলাটিকে একটি বৈশ্বিক পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তরিত করার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ। বিমানবন্দরের অপারেশনাল প্রস্তুতি বিমান সংযোগকে উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী করবে এবং বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার ট্রাভেল মার্কেটের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রাখবে।

২০২১ সালে শুরু হওয়া উন্নয়ন প্রকল্পের লক্ষ্য কক্সবাজারকে আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক প্রবেশদ্বার হিসেবে রূপান্তর করা।

একটি পৃথক রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্পে বিদ্যমান ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট লম্বা এয়ারস্ট্রিপ ৯ হাজার ফুট পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে যাতে বড় বিমান চলাচল করতে পারে। এটি ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পর কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত হয়েছে।

কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, নতুন  এ সুবিধা কেবল দেশের প্রধান সমুদ্র সৈকত গন্তব্যে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করাই নয়, বরং পচনশীল পণ্য রপ্তানি, নতুন ব্যবসায়িক সুযোগ তৈরি এবং স্থানীয় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সরকার টেকসই পর্যটন বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য তার দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সঙ্গতিপূর্ণভাবে কক্সবাজারকে একটি প্রধান আঞ্চলিক বিমান চলাচল কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।