বাসস
  ১১ অক্টোবর ২০২৫, ২২:০১

মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজন : রাবিতে সেমিনারে বক্তারা

রাজশাহী, ১১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আয়োজনে এক র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে। র‌্যালির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  

এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘সেবার সুযোগ : দুর্যোগ ও জরুরি পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্য’, যা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, দুর্যোগ শুধু ভবন, ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো ধ্বংস করে না, বরং মানুষের মন, আবেগ ও সমাজকেও বিপর্যস্ত করে।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈন উদ্দিন এবং অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান। সভায় সভাপতিত্ব করেন মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক এনামুল হক।

উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব বলেন, মানসিক স্বাস্থ্যকে অন্যান্য অসংক্রামক রোগের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করে নজরদারির আওতায় আনা জরুরি। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু হাতুড়ে ও সুযোগসন্ধানী গোষ্ঠী রোগীদের শোষণ করে অর্থ উপার্জনের পথ খুঁজে নিচ্ছে। এসব হাতুড়ে চিকিৎসক রোগীদের আরও বিপজ্জনক অবস্থায় ঠেলে দিচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, মানসিক রোগীদের জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চিকিৎসা সুবিধা অত্যন্ত সীমিত। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় চিকিৎসা সুযোগ সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।

প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার সমন্বয়ই চিকিৎসা ব্যবধান কমানোর এবং সাধারণ জনগণের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হয়ে উঠেছে বলে তিনি মত দেন।

অধ্যাপক মঈন উদ্দিন বলেন, সব ধরনের মাদকাসক্ত, বিশেষ করে ইনজেকশন ব্যবহারকারী মাদকাসক্তরা মানসিকভাবে অসুস্থতায় ভোগেন, কারণ মাদক তাদের শারীরিক শক্তি ও স্নায়ুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

তিনি বলেন, মানসিক রোগীরা সমাজের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ। তারা প্রায়ই নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন। তাদের যথাযথ চিকিৎসার আওতায় আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি জোর দেন।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শেখ মোস্তফা আলীম আলোচনায় বলেন, বাংলাদেশে মানসিক রোগ এখনো একটি অবহেলিত জনস্বাস্থ্য সমস্যা।

তিনি বলেন, ‘মানসিক রোগ সম্পর্কে সচেতনতা এবং চিকিৎসা গ্রহণের প্রবণতা সামাজিক কুসংস্কার ও অপবাদজনিত কারণে অত্যন্ত কম।’

তিনি আরও বলেন, মানসিকভাবে অসুস্থ ও দুর্যোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মনোসামাজিক সেবা প্রদান দেশের স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ ব্যবস্থার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।