শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): শারদীয় দুর্গোৎসবের অষ্টমী তিথিতে চট্টগ্রামে কুমারী রূপে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। দেবী মহামায়ার পাঁচ রূপে সজ্জিত হয়েছিলেন ছয়টি শিশু। পূজার শুরুতে কুমারীদের ফুল, চন্দন, বেলপাতা, তুলসি পাতা দিয়ে মন্ত্রপাঠ আর স্তুতিতে বন্দনা করা হয়।
মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) সকালে নগরের পাথরঘাটায় শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে কুমারীপূজায় দেবীবন্দনা করেন হাজারো ভক্ত। দুপুরে পূজা শেষে অঞ্জলি দেন ভক্তরা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, দুর্গার বিভিন্ন রূপের মধ্যে ‘উমা’ হয়ে রাধেশ্রী দত্ত (৬), ‘রুদ্রাণী’ নামে সুভদ্রা বিশ্বাস প্রতীক্ষা (১১), ‘কালসন্দর্ভা’ নামে অদ্রিজা বিশ্বাস (৯) ও নিভৃত দত্ত (৯), ‘মালিনী’ রূপে জুলি দাশ (৭) এবং ‘কুজ্জিকা’ রূপে প্রীতি ধর (৮) দেবীর আসনে বসেছিলেন।
কুমারীপূজায় রাধা গোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরের শ্যামল সাধু মোহন্ত মহারাজের আদেশে পৌরহিত্য করেন বলরাম দাস। তিনি জানান, হিন্দু শাস্ত্রমতে, সাধারণত এক থেকে ১৬ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা যে কোনো বর্ণের ও গোত্রের কুমারীকে পূজা করার উল্লেখ রয়েছে। বয়স ভেদে কুমারীর নাম ভিন্ন হয়।
শাস্ত্রমতে, উমা নামে কুমারী পূজিত হলে ফললাভ ও শত্রুবিনাশ হয়, মালিণী নামে পূজিত হলে ধনৈশ্চর্য বাড়ে, কুজ্জিকা নামে পূজা করলে শত্রুদের মোহিত, কালসন্দর্ভ নামে পূজিত হলে দারিদ্র্য ও শত্রু বিনাশ হয়।
রাধা গোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরের শ্যামল সাধু ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলেন, কুমারী আদ্যাশক্তি মহামায়ার প্রতীক এবং কুমারীতে নারীর পরমার্থ দর্শন ও পরমার্থ অর্জন। দুর্গার আরেক নাম কুমারী। মূলত নারীকে যথাযথ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে কুমারী পূজা করা হয়। মাটির প্রতিমায় যে দেবীর পূজা করা হয়, তারই বাস্তবরুপ কুমারীপূজা।
‘কুমারীতে সমগ্র জাতির শ্রেষ্ঠ শক্তি, পবিত্রতা, সৃজনী ও পালনী শক্তি সব কল্যাণী শক্তি সুক্ষরূপে বিরাজিতা। কুমারী প্রতীকে জগৎজননীর পূজায় পরম সৌভাগ্য লাভ হয়। এই রুপ কুমারী সমগ্র জগতের বাক্যস্বরুপা, বিদ্যাস্বরুপ। তিনি এক হাতে অভয় এবং অন্যহাতে বর প্রদান করেন।’
২০০৪ সাল থেকে চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। নগরীর রাজাপুকুর লেইনের শ্রী শ্রী পঞ্চমাতা বিগ্রহ বাড়ি ও সেবাশ্রমেও কুমারীপূজা হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রামের বাঁশখালী অদ্বৈতানন্দ ঋষিমঠ ও মিশনেও প্রতিবারের মতো কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়। এতে পৌরহিত্যে করেন উপাধ্যক্ষ রামানন্দ পুরী মহারাজ এবং উপস্থিত ছিলেন মিশনের অধ্যক্ষ বিবেকানন্দ পুরী মহারাজ।