বাসস
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৫

ফ্যাসিবাদের মতো তামাকও নির্মূল করতে হবে: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ছবি: বাসস

ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, যেভাবে তরুণরা বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদ দূর করেছে, সেভাবে তামাকও নির্মূল করতে হবে। 

তিনি বলেন, তামাক কোম্পানির নানা কূটকৌশলের কারণেই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এতদিন বিলম্বিত হয়েছে। আর দেরি করা যাবে না।

আজ বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবিতে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পূয়র-ড্রপ আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশ’ বিষয়ক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, তামাক কোম্পানি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে কোনোভাবেই স্টেকহোল্ডার হতে পারবে না। সরকার কোন অবস্থাতেই এরকম জনস্বার্থ বিরোধী কাজ করবে না। 

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ড্রপ’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এএইচএম নোমান এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড্রপ’র প্রকল্প সমন্বয়কারী জেবা আফরোজা। উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসির সাথে সামঞ্জস্য রেখে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত খসড়ার সংশোধনীগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৬টি প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি। এর মধ্যে: অধূমপায়ীদের সুরক্ষার জন্য সকল প্রকার পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, তামাকপণ্যের সকল প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান বলেন, টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিগুলো মুনাফার আশায় মিথ্যা প্রচার করে বলছে যে, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশ হলে সরকার বিপুল পরিমাণে রাজস্ব হারাবে। অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন ও ২০১৩ সালে সংশোধনের পর গত ১৮ বছরে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়েছে সাড়ে ১২ গুণ।

বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, গত ১৩ জুলাই ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য (নিয়ন্ত্রণ) আইন সংশোধনের খসড়া পর্যালোচনার জন্য গঠিত উপদেষ্টা কমিটি ঘোষণা করেছে যে, তারা টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের “স্টেকহোল্ডার আলোচনায়” আমন্ত্রণ জানাবে। 

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সচিব (অব.) মুন্সী আলাউদ্দীন আল আজাদ, তামাক বিরোধী যুব প্রতিনিধি আয়েশা আকতার শিল্পী এবং নাইমুর রহমান ইমন।