শিরোনাম
দিনাজপুর, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের ২০ ব্যাচের সেকশন 'এ' ও সেকশন 'সি'র শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত আনন্দঘন ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে 'র্যাগ ডে উদযাপন করেছেন।
আজ বৃহসপতিবার বিকাল ৫ টায় দিনাজপুর হাবিপ্রবি'র জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মো. খাদেমুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আজ দুপুর আড়াই টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত দু'ঘন্টা ব্যাপী কৃষি অনুষদ সেকশন 'এ' ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড.কুদরত ই খুদা ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোর গ্যালারিতে এবং সেকশন 'সি' ব্যাচের শিক্ষার্থীরা কৃষি অনুষদ ভবনের ক্লাসরুমে 'র্যাগ ডে'র আয়োজন করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম সিকদার, উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের ড. মো. মহিদুল হাসান, কৃষি অনুষদের কীটতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আদনান আল বাচ্চুসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অধ্যাপক ড.শফিকুল ইসলাম সিকদার বলেন, "জীবনে সব সময় দু'টি জিনিস পালন করার চেষ্টা করবা, একটি কর্মঠ হবা এবং সততা ধরে রাখবা। অন্যায়ের সাথে আপোষ করার মন মানসিকতা কখনো রাখবা না। সত্য কথা বলতে পিছুপা হবা না। নিজের নৈতিক আদর্শ ধরে রাখার চেষ্টা করবা। তোমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের সফলতা কামনা করি। তোমাদের সকলের প্রতি আমার দোয়া ও ভালোবাসা রইলো।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের 'র্যাগ ডে' উদযাপন একটি ঐতিহ্যবাহী এবং আনন্দঘন ঘটনা। সাধারণত স্নাতক শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীরা তাদের বিদায়লগ্নে উদযাপন করে থাকে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনের শেষ স্মৃতিময় মুহূর্ত গুলোকে স্মরণীয় করে রাখার একটি প্রচেষ্টা। 'র্যাগ ডে' আধুনিক উদযাপন মূলত বন্ধুত্বপূর্ণ এবং উৎসব মুখর হয়।
আবার এটিকে একটি বিদায়ী উৎসব ও বলা যেতে পারে, কারণ শিক্ষার্থীরা তাদের দীর্ঘদিনের ক্যাম্পাস জীবনের ইতি টানার আগে শেষ বারের মতো বন্ধু, শিক্ষক এবং ক্যাম্পাসের সাথে সময় কাটানোর সুযোগ পায়। এটি আনন্দ, উল্লাস এবং কিছুটা বিষাদের এক মিশ্র অনুভূতি নিয়ে আসে। ক্যাম্পাসের দেয়াল, ক্লাস রুম এবং বিভিন্ন স্থানে নিজেদের ব্যাচের নাম, মজার উক্তি বা স্মৃতিময় ছবি দিয়ে সাজানো হয়।
এই দিনটিতে শিক্ষার্থীরা সেজেছিল রঙ্গিন সাজে বিশেষ করে বাঙালি নারীর ঐতিহ্যের প্রতীক শাড়ি পড়ে অনেক শিক্ষার্থীই এসেছিল যা ব্যাচের সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছিল। বন্ধুদের সাথে আড্ডা, সেলফি, গান, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মরণীয় দিনগুলি সবকিছুই যেন মিলেমিশে একাকার হয়েছিল এদিন। শিক্ষকেরাও স্মৃতিচারণ করছিলেন শিক্ষার্থীদের নিয়ে। আনন্দের সাথে যেন এক আবেগের যোগসূত্র বিরাজ করছিল সেই পরিবেশে।
স্মৃতিময় দিনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষি অনুষদের ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী জাকারিয়া জুয়েল জানান, "এই মুহূর্তে আমি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এতো সুন্দর একটা প্রোগ্রাম সবাইকে উপহার দেওয়ার সুযোগ হয়েছে। একই সাথে উপস্থিত সকল সম্মানিত শিক্ষকদের প্রতিও আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম, মমতাময়ী দিকনির্দেশনা ও আন্তরিক স্নেহ আমাদের প্রতিনিয়ত উৎসাহিত করেছে। আপনাদের শিক্ষাদান, পরামর্শ ও অনুপ্রেরণা আমার জীবনের অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে। সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও আপনাদের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি এবং আশা রাখি ২০ ব্যাচের সাথে আজ থেকে ১০ বছর পর হলেও আবার একটা ফেয়ারওয়েল আয়োজন করতে চাই। সবার ভবিষ্যতে জীবনের জন্য শুভ কামনা।
একই ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসুদ রানা তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, "২০২০ সালের জানুয়ারিতে শুরু আমাদের ভার্সিটি লাইফের আজ পরি সমাপ্তি ঘটলো। রাগ অভিমান ভালোবাসায় ঘেরা আমাদের এই পথ চলা ছোট গল্পের মতোই অনন্য। ভালো থাক আমার ভালবাসার মানুষ গুলো।