শিরোনাম
ঢাকা, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দেশের প্রধান নদীগুলোতে পলি জমা, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকার, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিদূষণের কারণে ইলিশ উৎপাদন ব্যাপকহারে হ্রাস পেয়েছে। এতে জাতীয় মাছ ইলিশের দাম সাধারণ ভোক্তাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে।
মৎস্য অধিদপ্তর ৫২টি গুরুত্বপূর্ণ নদীর পয়েন্টে ব্যাপক পলি জমা চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর সোনারচর থেকে নোয়াখালীর ঢালচর পর্যন্ত মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর প্রায় ৫০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পলি জমে ইলিশের সাগর থেকে নদীতে আসার পথ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
মৎস্য অধিদপ্তর ক্ষতিগ্রস্ত রুটগুলোর তালিকা মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়ে জরুরি ভিত্তিতে পলি অপসারণ ও নাব্যতা ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়েছে।
ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের পরিচালক মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, সরকারের সুরক্ষা কর্মসূচিগুলো মূলত নদীকেন্দ্রিক হলেও সাগরে ইলিশ সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ ৬০ শতাংশ ইলিশ সেখানেই ধরা হয়।
ঢাকার ভোক্তারা বলেছেন, বাজার থেকে ইলিশ প্রায় উধাও হয়ে গেছে। অল্প যে মাছ পাওয়া যাচ্ছে, তা রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশ ২,৫০০ থেকে ২,৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
পুরান ঢাকার নবাবগঞ্জ বাজারে স্কুল শিক্ষক নুরন্নবী হোসেন বলেন, গত বছর আমি ১,২০০ টাকা কেজি দরে ইলিশ কিনেছিলাম। এখন দাম দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে গেছে।
নিউ মার্কেটের মাছ ব্যবসায়ী সানাউল্লাহ মৃধা বলেন, ছোট ইলিশ (৬০০ গ্রামের নিচে) প্রতি কেজি ১,৮০০ থেকে ২,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর মাঝারি আকারের (৮০০-৯০০ গ্রাম) ইলিশ প্রতি পিস ২,২০০ থেকে ২,৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি বলেন, পাইকারি দামও ব্যাপকহারে বেড়েছে।
সানাউল্লাহ মৃধা বলেন, সদরঘাটে এক মণ (৪০ কেজি) মাঝারি আকারের ইলিশের দাম এখন ৭২ হাজার থেকে ৭৬ হাজার টাকা।
পাইকাররাও একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. রমজান আলী জানান, ১ কেজির বেশি ওজনের বড় ইলিশ এখন বরিশাল, বরগুনা, কক্সবাজার ও পটুয়াখালীর পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় পাইকারি বাজারগুলোতে মাঝারি আকারের ইলিশের দাম কেজিপ্রতি ১,৭০০ থেকে ১,৭৫০ টাকা এবং ছোট আকারের ইলিশের দাম কেজিপ্রতি ১,১৫০ থেকে ১,২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।