শিরোনাম
ঢাকা, ২৮ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, একটি দেশকে ফিজিক্যাল কলোনি বানানোর আগে প্রথম যে কাজটা করতে হয় সেটা হচ্ছে তাকে ইন্টেলেকচুয়াল কলোনিতে রূপান্তরিত করা।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুকে জানান, ‘তাকে প্রতিনিয়ত বোঝানো যে, ‘তোমার কোন সংস্কৃতি নাই’। থাকলেও তোমার সংস্কৃতি লো কালচার। যেমন, লালনের গান। হেজেমনিক কালচারের ফ্রেমের সঙ্গে মিলছে না বলে এটাকে হাই আর্ট মানতে পারলো না আমাদের উপনেবেশিক মন। ভদ্রসমাজ তখন চিন্তা করলো এটাকে নিয়ে কি করা যায়? সহজ সমাধান হিসেবে ট্যাগ দিলো ‘ফোক’। মানে মেইনস্ট্রিম না, সাব কালচার। তারপর ধরেন রক মিউজিক। এটা নিয়েও ভদ্রসমাজ বিপদে পড়ে গেলো। একেতো তাদের সেট করা ‘হেজেমনিক ফ্রেমে’ হাই আর্ট হিসাবে ধরা হচ্ছে না। সহজ সমাধান করলো ট্যাগ দিয়ে ‘অপসংস্কৃতি’। এইভাবে আমাদের রাষ্ট্র বা এস্টাবলিশমেন্ট চিরকাল আমাদের গৌরবময় ঐশ্বর্যগুলোকে রাষ্ট্রীয় উদযাপন ও স্বীকৃতির বাইরে রেখেছে।’
সংস্কৃতি উপদেষ্টা তাঁর মতামত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘চব্বিশ পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের দায় হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের চর্চা এবং অংশগ্রহণ যে সংস্কৃতি আন্তর্জাতিকমানের হয়ে উঠছে সেটিকে সেলিব্রেট করা। এই সেলিব্রেশন জাতিকে আত্মবিশ্বাসী ও আত্মমর্যাদাপূর্ণ করে তোলে। পাশাপাশি এই সেলিব্রেশন বাইরের দুনিয়ায় আমাদের নিজেদের কালচারাল আইডেন্টিটি তৈরিতে সাহায্য করে।
তিনি বলেন, ‘এর প্রথম ধাপ হিসেবে আজকে ক্যাবিনেটে লালনের তিরোধান দিবসকে ‘ক’ শ্রেণীর দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে আরো কয়েকজন কালচারাল আইকন এবং কনটেম্পরারি মাস্টারকে নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এস এম সুলতানের জন্মদিনকে ‘ক’ শ্রেণীর জাতীয় দিবস হিসেবে উদযাপন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর পাশাপাশি আলোচনা করেছি স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের বড় কালচারাল ফেনোমেনাগুলো নিয়ে। ‘যেমন, হুমায়ূন আহমেদ। আমার মনে হয় না তাঁর চেয়ে বেশি ইমপ্যাক্ট আমাদের লেখকদের মধ্যে কেউ রাখতে পেরেছেন। আলোচনা করেছি বাংলাদেশী রক আইকন সেলিব্রেট করার বিষয়ে।’
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, লালন সেলিব্রেট করা দিয়ে আমরা রবীন্দ্র-নজরুলের বাইরে তাকাতে শুরু করলাম। এটা কেবল শুরু। আমি নিশ্চিত সেদিন বেশি দূরে না, যখন কনটেম্পরারি মাস্টার আর্টিস্টদেরও আমরা সেলিব্রেট করবো রাষ্ট্রীয়ভাবে। ধরা যাক, আইয়ুব বাচ্চুর কথাই। বাংলাদেশের এমন কোনো বর্গমিটার এলাকা পাওয়া যাবে না যেখানে তাঁর গান বাজে নাই। তাঁর মানের মিউজিশিয়ান যে কোনো দেশের জন্যই গর্বের। তাঁর জন্মদিন রাষ্ট্রীয়ভাবে উদযাপন করতে মৃত্যুর কত শত বছর পর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে?
‘দ্য আনসার, মাই ফ্রেন্ড, ইজ ব্লোয়িং ইন দ্য উইন্ড।’