বাসস
  ১০ আগস্ট ২০২৫, ১৬:২১
আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৫, ১৭:৫২

কার্নিশে ঝুলে থাকা ছাত্রকে গুলির মামলায় অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল

ঢাকা, ১০ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর রামপুরায় একটি ভবনের কার্নিশে ঝুলে থাকা এক ছাত্রকে গুলি ও একই এলাকায় অন্য দুই জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

সেই সাথে এই মামলায় পলাতক সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৪ আসামীর বিরুদ্ধে আজ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এছাড়া এই মামলায় পরবর্তী শুনানি ১৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে।

অভিযোগটি আজ উপস্থাপনের পর প্রসিকিউসনের আবেদনে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। ট্রাইবুনালে প্রসিকিউসনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।

গত বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ফারুক আহমেদ ও সাইমুম রেজা তালুকদার এই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগটি ট্র্যাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বরাবর দাখিল করেন। এই মামলার অভিযুক্ত আসামীরে হলেন- ডিএমপি’র খিলগাঁও জোনের সাবেক সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মশিউর রহমান, রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকার ও রামপুরা থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) তুরিকুল ইসলাম ভূইয়া।

এই আসামীদের মধ্যে গত ২৬ জানুয়ারি সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকারকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপি পুলিশ। পরে ২৮ জানুয়ারি তাকে হাজির করা হয় ট্রাইব্যুনাল তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই আমির হোসেন জুমার নামাজ পড়ে বাসায় ফিরছিলেন। 

আমির জানান, বাসার কাছে তখন পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার মধ্যে পড়ে যান তিনি। এসময় পুলিশ গুলি করা শুরু করে। এ সময় আমির হোসেন দৌড়ে নির্মাণাধীন একটি ভবনের চারতলায় গিয়ে আশ্রয় নেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া করে পুলিশ ভবনটির চারতলায় উঠে যায়। সেখানে আমির হোসেনকে পেয়ে পুলিশ সদস্যরা তার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে বারবার নিচে লাফ দিতে বলেন। একজন পুলিশ সদস্য তাকে ভয় দেখাতে কয়েকটি গুলিও করেন। এক পর্যায়ে ভয়ে আমির হোসেন লাফ দিয়ে নির্মাণাধীন ভবনটির রড ধরে ঝুলে থাকেন। তখন তৃতীয় তলা থেকে একজন পুলিশ সদস্য আমির হোসেনকে লক্ষ্য করে ছয়টি গুলি করেন। গুলিগুলো আমিরের দুই পায়ে লাগে। এক পর্যায়ে পুলিশ চলে গেলে আমির হোসেন ঝাঁপ দিয়ে কোনোরকমে তৃতীয় তলায় পড়েন। তখন তার দুই পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা পর একজন শিক্ষার্থী ও দুজন চিকিৎসক আমির হোসেনকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান এবং পরবর্তীতে সেখান থেকে তাকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

নির্মম এই ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান আমির হোসেন। এছাড়া রামপুরায় ওই একই দিন  ঘটনাস্থলের সামনে আরও দুজনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে।