বাসস
  ০৭ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৩৯

মাদারীপুরে দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুদকের অভিযান

মাদারীপুর, ৭ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : জেলার ডাসারে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের ভিত্তিতে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

ডাসার সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় (শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজ) ও শশীকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান ও উপ-সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান অপুসহ চার সদস্য।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর ‘শেখ হাসিনা একাডেমি অ্যান্ড উইমেন্স কলেজ জাতীয়করণ করার লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র জারি করে। উক্ত পরিপত্রে কলেজটির নিয়োগ, পদোন্নতি, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর ইত্যাদির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং  স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি সরকার এর নিকট হস্তান্তর করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। 

পরিপত্রে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা উপেক্ষা করে তৎকালীন অধ্যক্ষ, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অদৃশ্য শক্তির বলে সৈয়দ অলিউর রহমান, সুদীপ বসু, রেবেকা পারভান এ্যানী, নুরুন নাহার, হুমায়ুন কবির ও মো. মামুনসহ ছয়জনকে শিক্ষক ও কর্মচারী পদে নিয়োগ  দেন। 

জানা যায়, শশীকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের এক প্রভাষক ভারতে বসবাস করেও এই কলেজের শিক্ষক হিসেবে বাংলাদেশে বেতন তোলেন। এই কলেজের অধ্যক্ষও নানা অনিয়মের সাথে জড়িত। এই দুটি বিষয় নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ করলে বিষয়টি দুদকের নজরে আসে। এর প্রেক্ষিতে দুদক ওই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে।

জেলা দুদক কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি টিম দুটি কলেজে অভিযান পরিচালনা করেছে। একটি হলো, ডাসার সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় । যার পূর্বের নাম ছিল সরকারি শেখ হাসিনা উইমেন্স কলেজ। অপরটি শশীকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়। সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ে ছয়জন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও ম্যানেজিং কমিটি শিক্ষক ও কর্মচারী পদে নিয়োগ দেন । এ বিষয়ে আমরা ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করেছি। প্রাথমিক তথ্য ও রেকর্ড পত্র তাদের কাছে চেয়েছি। তারা কোনো কাগজপত্র আমাদের দেখাতে পারেনি। তারা আগামী রবিবার পর্যন্ত সময় নিয়েছে। 

তিনি বলেন, শশিকর শহীদ স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য আমরা হাতে পেয়েছি।  এগুলোর রেকর্ড পত্র আমরা সংগ্রহ করেছি। কলেজের অধ্যক্ষ দূর্লভানন্দ বাড়ৈ ও তার স্ত্রী একই কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক চম্পা রানী মন্ডল ও তার স্ত্রী ভারতে বসবাস করেন। তারা  বাংলাদেশ থেকে বেতন নিচ্ছেন এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় নিচ্ছেন  সেটা পর্যালোচনা করছি। সেটা আইন এবং বিধি বহির্ভূত হলে অবশ্যই আইন কমিশনের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য  প্রেরণ করা হবে। 

দুদকের অভিযানকালে শশীকর কলেজের অধ্যক্ষ অভিযুক্ত দূর্লভানন্দ বাড়ৈ উপস্থিত ছিলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। তাই এ প্রসঙ্গে আমার কিছু বলার নেই।  

ডাসার সরকারি মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাকিয়া সুলতানা বলেন, ওপর মহলের মৌখিক অনুমতির ভিত্তিতে তখন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য বিষয় দুদকের তদন্তেই প্রমাণিত হবে।