বাসস
  ০১ জুলাই ২০২৫, ২০:২১

হাওর এলাকায় ৬৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হচ্ছে ১০টি নতুন মাধ্যমিক স্কুল

প্রতীকী ছবি

মোশতাক আহমদ

ঢাকা, ১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : হাওর এলাকায় দশটি উপজেলা সদরে ১০টি মাধ্যমিক স্কুল স্থাপনের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এর অর্থায়নে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪১ কোটি ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে সমীক্ষা করার জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা এর তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত ১৮ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের পরিকল্পনা-২ শাখার উপসচিব এস, এম, ইমরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।

পত্রে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের আওতায় শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর হাওর এলাকায় নির্বাচিত ১০টি মাধ্যমিক স্কুল স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ‘প্রকল্প পরিচালক’ হিসেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামানকে নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হলো।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মীর্জা মোহাম্মদ আলী রেজা বাসসকে বলেন, দেশের ৪২৩টি হাওরবেষ্টিত এলাকা- কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোণা, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে গত বছর ৯ এপ্রিল পরিকল্পনা কমিশনে প্রাথমিক প্রস্তাব পাঠানো হয়। ওই প্রস্তাবের ওপর গত ২০ মে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় একটি নিরপেক্ষ দক্ষ পেশাদার প্রতিষ্ঠান ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি শেষ করে প্রকল্প দলিল আবার পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে সমীক্ষা প্রস্তাবটি তৈরি করা হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ কর্মকর্তা জানান, গত বছর জুলাইয়ে এসএফডির মিশন প্রতিনিধিরা বাংলাদেশ সফরকালে উল্লিখিত সমীক্ষা কার্যক্রমটি তিন মাসের মধ্যে শেষ করার তাগিদ দিয়েছিলেন। এ প্রেক্ষিতে ‘সেকেন্ডারি স্কুলস এট সিলেকটেড উপজেলা সদর ইন হাওর এরিয়া’ প্রকল্পের সমীক্ষার কাজটি চলতি অর্থবছরের এডিপির নতুন অননুমোদিত প্রকল্প তালিকায় জরুরিভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য বৈঠকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এতে শিক্ষা উপদেষ্টারও সম্মতি রয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে আমরা আশা করি এ বিষয়ে একটি বাস্তবধর্মী সমীক্ষা রিপোর্ট হাতে পাব। তার পরেই আমরা এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো। সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এর অর্থায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলেও তিনি জানান।

জানতে চাইলে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর, ঢাকা এর তত্ত্ববধায়ক প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বাসসকে বলেন, হাওর এলাকার অনগ্রসর মানুষদের মধ্যে শিক্ষার আলো পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্কুলগুলো স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কোথায় কীভাবে স্থাপন করা যাবে এ নিয়ে সমীক্ষা কার্যক্রম চলছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, কিশোরগঞ্জ জেলার বড় হাওড়টি অষ্টগ্রাম, ইটনা, মিঠামইন ও নিকলী উপজেলা নিয়ে গঠিত। ৯ লাখ ৯০ হাজার ৩৯৬ হেক্টর আয়তনের এই বিশাল এলাকার জনগণ বাংলাদেশের অন্যান্য সব এলাকা থেকে পিছিয়ে।

অষ্টগ্রামের সাতটি ইউনিয়ন, ইটনার আটটি ইউনিয়ন, মিঠামইনের আটটি ইউনিয়ন ও নিকলীর আটটি ইউনিয়নে বসবাসকারী জনগণের শিক্ষার হার যথাক্রমে ৩৭ দশমিক ৪ শতাংশ, ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ, ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ ও ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ। অথচ বাংলাদেশের শিক্ষিতের হার ৭১ শতাংশ। এই হাওরাঞ্চলে আমরা শিক্ষার বিস্তার করতে চাই। এ জন্যই নতুন এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে সরকার।