বাসস
  ২১ জুন ২০২৫, ১৬:৫৭
আপডেট : ২১ জুন ২০২৫, ১৭:১০

রাজশাহীর নিমাই বিলের কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের দাবি

ছবি: বাসস

ঢাকা, ২১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নিমাই বিলের কৃষি জমিতে জোরপূর্বক অবৈধভাবে পুকুর খনন বন্ধের দাবি জানিয়েছে রাজশাহীর তিন সংগঠন।

আজ শনিবার বেলা ১১ টায় গণকপাড়ায় অবস্থিত অংশু বুক ক্যাফেতে সংবাদ সম্মেলনে  ‘কৃষি জমি রক্ষা কর, খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত কর’ স্লোগানে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি রাজশাহী মহানগর এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন- রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন, বাগমারার আহ্বায়ক ও মোহনপুর কলেজের প্রভাষক মো. আমজাদ হোসেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন- নদী ও পরিবেশ গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, আ্যাডভোকেট হোসেন আলী পিয়ারা, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক, জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী ও ঈশিতা ইয়াসমিনসহ প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলার পাশাপাশি বাগমারা উপজেলার নিমাই বিলের কৃষিজমিতে জোর জবরদস্তি অবৈধ পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। কৃষি জমি রক্ষায় এ বিষয়টি নিয়ে চার থেকে পাঁচ মাস যাবৎ প্রশাসনের দৃষ্টিতে আনার জন্য মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। এরপরেও কোন প্রতিকার না পেয়ে গত ১৯ মার্চ বিজ্ঞ রাজশাহী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাগমারা আমলী আদালতে একটি মামলা করা হয়। বাগমারা উপজেলার এসিল্যান্ড বরাবর মামলাটির তদন্তভার রয়েছে। একই বিষয়ে কোন অগ্রগতি না ঘটলে গত ৮ এপ্রিল মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট-পিটিশন দেওয়া হয় এবং এই রিটে বাগমারা উপজেলায় পুকুর খননে স্থগিতাদেশসহ রাজশাহী জেলা প্রশাসক, ইউএনও, এসিল্যান্ডকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

আসামিরা দেশের প্রচলিত আইন, উচ্চ আদালতের রিট পিটিশনসহ সব কিছুকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় নিমাই বিলের প্রায় ৬০ বিঘা কৃষি জমিতে ঈদ-উল-আজহার ছুটিতে আবারো পুকুর খনন শুরু করেছে। তথাকথিত কতিপয় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও ভূমিদস্যূরা এই কাজের সঙ্গে জড়িত। তারা প্রতিনিয়ত রাত ১১টার পর থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত সাতটি স্কেভেটার মেশিন দিয়ে খনন কাজ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও দেশের প্রচলিত আইনে ফসলী জমিতে পুকুর খনন করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ, বাগমারা থানা, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসনকে একাধিকবার অবগত করা হলেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বরং নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়। অবৈধ খননের কারনে কৃষকদের আবাদ নষ্ট হচ্ছে এবং জমি আবাদের অনুপযোগী হওয়ায় কৃষকরা অনিশ্চিত ভবিষৎ এর মধ্যে পড়েছেন।

সংবাদ সম্মেলন থেকে দাবি জানানো হয়, অবিলম্বে কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধে দৃশ্যমান কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। চিহ্নিত ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ভূমি দস্যূতায় সহতায়তাকারী সরকারি কর্মকর্তাদের অপসারণসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। জোরপূর্বক পুকুর খনন করতে গিয়ে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করতে হবে এবং তার ক্ষতিপূরণ দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে এবং দোষিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। রাজশহীর বিভিন্ন উপজেলায় কৃষি জমিতে পুকুর খননের যে মহোৎসব চলছে তা অতিদ্রুত বন্ধ করতে হবে।