বাসস
  ২০ জুন ২০২৫, ১৪:২৯

নৌকার ভাড়া বৃদ্ধি, লালমনিরহাটের তিস্তার চরের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ বিপাকে

ছবি : বাসস

লালমনিরহাট, ২০ জুন, ২০২৫ (বাসস): জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের মুন্সিরবাজার থেকে তিস্তানদীর দ্বীপচর মিনার বাজারে যাওয়ার খেয়া ঘাটের এ মৌসুমে  নৌকার ভাড়া বৃদ্ধি করায় চরম বিপাকে পড়েছে দ্বীপচর মিনারবাজারের কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ ও চর থেকে আসা  কালিগঞ্জ ও লালমনিরহাটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে  অধ্যায়নরত প্রায় ১২’শ শিক্ষার্থী।

এর আগে প্রতিবছর শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হালখাতা করে  টাকা আদায় করলেও এবছর পারাপারের সময় বেশী  ভাড়া আদায় করায় চরম বিপাকে পড়েছেন এসব শিক্ষার্থী।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও চরবাসীর মতে  বিভিন্ন পার্টির নেতারা  প্রভাব খাটিয়ে  জেলা পরিষদের  নির্ধারিত ভাড়ার পরিবর্তে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে, চর থেকে একজন মানুষকে শহরে প্রয়োজনীয় কাজে আসতে  দুটি ঘাট অতিক্রম করে আসতে হয়।  বড়াইবাড়ি খেয়া ঘাটে ৫০ টাকা নৌকা ভাড়া  ও মিনার বাজার ঘাটে ৩০ টাকা, তিস্তায় আবার অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধি হলে ৫০ টাকা টাকা নেওয়া হয় মোট ৮০-১০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। মোটরসাইকেল প্রতি ৬০ টাকা ও গরু মহিষের গাড়ি  পারাপারে ৪০০ থেকে ১০০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এছাড়াও  চরের উৎপাদিত কৃষি পণ্য পরিবহণ এ অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন ঘাট ইজারাদার। প্রতি বস্তা ধান ভুট্টা নৌকায়  পরিবহণ করতে ৪০-৫০ টাকা আদায় করা হয়।

চরের মানুষকে জিম্মি করে ভাড়া বৃদ্ধি ও হয়রানির প্রতিবাদে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি ও বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করছেন মিনারবাজার থেকে কালিগঞ্জ উপজেলার মুন্সির বাজারে আসার খেয়া ঘাটের  চরের শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণ।

চরবাসী ও শিক্ষার্থীরা বলেন, চরে নতুন কেউ আসলে তার কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হয়,আবার রাতে চরের কোন ব্যক্তি অসুস্থ বা জরুরি কাজে শহরে আসলে  ইচ্ছেমতো  ভাড়া আদায় করছেন ঘাটের ইজারাদার। তাদের দাবি জেলা পরিষদের নির্ধারিত  নৌকা ভাড়ার চাট প্রদর্শন করে ভাড়া আদায় করতে হবে।

এ বিষয়ে চরের কৃষক মো. আব্দুর রশীদ বলেন, চর থেকে ধান ভুট্টা সহ বিভিন্ন ধরনের উৎপাদিত ফসল  বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে  অতিরিক্ত ে যাতায়াত ভাড়ার কারণে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তিনি।

তিস্তার দ্বীপ চর মিনার বাজারের অধিবাসী  মুন্সির রশিদুল ইসলাম বলেন, তার তিন সন্তান কালিগঞ্জে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে।  তিন সন্তানকে প্রতিদিন দশ টাকা করে ও নদী পার হওয়ার পর আরো যাতায়াত ভাড়া দিতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। ভাড়া না কমালে তিনি সহ আরো অনেক চরের মানুষ তাদের সন্তানকে লেখাপড়া করাতে আর শহরে পাঠাতে পারবেন না।

কালিগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী লাবলু মিয়া বলেন, চরের মানুষকে জিম্মি করে দীর্ঘদিন  ভাড়া আদায় করছেন এই ইজারাদার চক্রটি।  সাহস নিয়ে তারা এবার এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছেন, ইতোমধ্যে পুলিশ সেনাবাহিনীর সহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তারা অভিযোগ করেছেন।

এ বিষয়ে ঘাট ইজারাদার আবু তালেবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বেশি টাকায় এবছর ঘাট ইজারা নেওয়া হয়েছে। পূর্বে থেকে যেভাবে  ভাড়া নেওয়া হতো একই নিয়মে ভাড়া আদায় করছেন বলে তিনি জানান।

গঙ্গারচারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মৃধা বলেন, দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে,শিক্ষার্থীদের ও চরের অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সমস্যার সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।