শিরোনাম
রাঙ্গামাটি, ৪ জুন ২০২৫(বাসস) : পাহাড়ে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। পাহাড়ে সাধারণত প্রাকৃতিকভাবেই বেড়ে ওঠে স্বাস্থ্যবান পাহাড়ি গরু। তবে এবার কোরবানির ঈদ ঘনিয়ে আসতেই পাহাড়ের লাল বিরিষ গরুর চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
আসন্ন কোরবানির ঈদ’কে সামনে রেখে রাঙ্গামাটির দুর্গম প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকা থেকে প্রতিদিন গরু খামারি ও ব্যবসায়ীরা কাপ্তাই হ্রদের মধ্য দিয়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ইঞ্জিনচালিত বোটসহ নানা মাধ্যমে কোরবানির পশু নিয়ে আসছে রাঙ্গামাটির পৌরসভা কর্তৃক পরিচালিত ট্রাক টার্মিনাল কোরবানির পশুর হাটে। স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি প্রতিদিন শত শত গরুর ট্রাক যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু, মাইনী, নানিয়ারচর, কাউখালী আর রাজস্থলীর ফারুয়া ইউনিয়ন থেকে প্রতিদিন কাপ্তাই হ্রদ দিয়ে ট্রলারে করে শত শত গরু আসছে জেলার একমাত্র কোরবানি পশুর হাট শহরের ট্রাক টার্মিনালে। পাহাড়ের এসব গরু সংগ্রহ করে পাইকার ব্যবসায়ীরা পরে ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে । বিশেষ করে চট্টগ্রামের রাউজান, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া, পটিয়া, চন্দনাইশ সহ আশেপাশের অঞ্চলে।
জেলা উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রতন কুমার দে বাসসকে জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে জেলার ১৯টি কোরবানি পশুর হাটে মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া জেলার ১০ উপজেলার যেসব হাটবাজারে গরু-ছাগল উঠবে সেখানেও সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে মেডিকেল টিম সেবা প্রদান করছে।
জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তুষার কান্তি চাকমা বাসসকে জানান, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে প্রায় ৬২ হাজার ৮শ ৮২টি। বর্তমানে জেলায় ৬৮ হাজার ৮শ ৬৫টি গবাদি পশু মজুদ রয়েছে। আশাকরি এবার কোরবানির পশুর স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এ বছর জেলায় আরো ৫ হাজার ৯শ ৮৩টি গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকবে । তিনি আরো বলেন, কোন ধরনের মোটা-তাজাকরণ ওষুধ ছাড়াই এসব পাহাড়ি গরু বনে পাহাড়ে স্বাধীনভাবে বেড়ে ওঠায় দেখতে বেশ হৃষ্টপুষ্ট। তাই এইসব গরু ব্যাপকভাবে আসতে থাকায় বাজারে কোরবানির পশুর কোন সংকট তৈরি হবে না।
কোরবানি পশুর হাটে চাঁদাবাজিসহ যে কোন ধরনের সমস্যা মোকাবেলায় টার্মিনালের পশুর হাটে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে বলে বাসসকে নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. সাহেদ উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বাসসকে আরো জানান, এবার পবিত্র ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া ট্রাক টার্মিনাল, বিভিন্ন সড়কে অবৈধ টোল বা চাঁদাবাজির কোনো অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং এই ব্যাপারে আমরা তৎপর আছি।
দেশের গবাদি পশুর চাহিদার বিরাট অংশ এই পাহাড়ি অঞ্চল থেকেই পূরণ হচ্ছে। পাহাড়ে সম্ভাবনাময় গবাদি পশুর উৎপাদনে সরকারি কার্যকরী উদ্যোগ নেয়া হলে স্থানীয় চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি দেশের পশুর চাহিদা পুরণে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিরাট ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আশা স্থানীয়দের।