শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ৩ জুন, ২০২৫ (বাসস) : পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) পোশাক তৈরির জন্য রোলিং করা কাপড় বোঝাই গাড়ি ‘ওয়েল ফেব্রিক্স’ কারখানা থেকে জব্দ করেছে পুলিশ। কারখানাটির মালিক চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আবদুচ ছালাম।
এসময় পুলিশ আবদুচ ছালামের ছোট ভাই তারিকুল ইসলামসহ চারজনকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়, পোশাকগুলো কেএনএফ এর সদস্যদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল কি না, তা যাচাই-বাছাই চলছে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তারা পোশাক তৈরির জন্য কাপড় সরবরাহের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
মঙ্গলবার (৩ জুন) চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফতাব উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সোমবার রাতে নগরীর চান্দগাঁও থানার কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকার ‘ওয়েল ফেব্রিক্স এন্ড ওয়েল কম্পোজিট নিট লিমিটেড’ নামে ওই কারখানায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে জব্দ করা হয় রোলিং করা ‘সন্দেহজনক’ কাপড়। এসময় সাবেক এমপি ও সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের ছোটভাইসহ মালিকপক্ষের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, ওয়েল কম্পোজিট নিট লিমিটেডের পরিচালক তারিকুল ইসলাম। ওয়েল ফেব্রিক্স লিমিটেডের মালিক প্রতিষ্ঠান ওয়েল গ্রুপ। যেটি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক মো. আবদুচ ছালামের পারিবারিক মালিকানায় থাকা শিল্পগোষ্ঠী।
চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফতাব উদ্দিন জানিয়েছেন, বায়েজিদ বোস্তামি থানায় কুকি-চিনের পোশাক উদ্ধার সংক্রান্ত একটি মামলা আছে। সেই মামলার সূত্রে ওয়েল ফেব্রিক্সে অভিযান চালানো হয়েছে। চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে বায়েজিদ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। কুকি-চিনের পোশাক তৈরির জন্য কাপড়গুলো ওই কারখানা থেকে সাপ্লাই দেওয়া হয়েছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়।
এরআগে গত ২৭ মে রাতে পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডের একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার পোশাক জব্দ করে পুলিশ। এই ঘটনায় বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, জব্দ করা পোশাকগুলো পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের পোশাক। মহালাসিন মারমা নামের এক ব্যক্তি ৫০ লাখ টাকার চুক্তিতে পোশাকগুলো তৈরি করতে দিয়েছিলেন।
এর আগে ২৬ মে রাতে নগরের অক্সিজেন নয়াহাট এলাকার একটি কারখানা থেকে ১১ হাজার ৭৮৫টি পোশাক উদ্ধার করে পুলিশ। এ ছাড়া ১৭ মে রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার নয়ারহাট এলাকার রিংভো অ্যাপারেলস থেকে ২০ হাজার ৩০০টি সন্দেহজনক পোশাক জব্দ করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ওই ঘটনায় করা মামলার এজাহারে পুলিশ বলেছে, দুই কোটি টাকার চুক্তিতে পোশাকগুলো প্রস্তুতের ফরমাশ নেওয়া হয়। এ ঘটনায় পোশাক কারখানাটির মালিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার তিনজন হলেন, সাহেদুল ইসলাম, গোলাম আজম ও নিয়াজ হায়দার। পুলিশ জানিয়েছে, সাহেদুল ইসলাম কারখানার মালিক। অন্য দুজন পোশাকগুলো তৈরির ফরমাশ এনেছিলেন।