শিরোনাম
মনসুর আহম্মেদ
রাঙ্গামাটি, ১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারনে জেলার সদর উপজেলাসহ অন্যান্য কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বিভিন্ন স্কুল, বসতবাড়ী ও ফসলী জমি বন্যার পানিতে ডুবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে আজ সকালে রাঙ্গামাটি- চট্টগ্রাম সড়কের সাপছড়ি, কলাবাগানসহ বিভিন্ন স্থানে পাহাড় ধসের ফলে সড়ক যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ হয়ে যায় বলে বাসসকে নিশ্চিত করেছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা।
তিনি জানান, পাহাড় ধসের কারনে রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের কয়েকটি স্থানে সড়ক যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ থাকলেও পরে সড়ক ও জনপদ বিভাগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক রাস্তার মাটি সরিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। বর্তমানে সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এছাড়া জেলার কয়েকটি উপজেলার সড়ক ও পাহাড় ধসের ফলে ফসলী জমিসহ রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
জুরাছড়ি উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রূপময় চাকমা বাসসকে জানান, গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে পাহাড়ী ঢলে উপজেলার মৈদং ইউনিয়নের জামুরাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শীলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্লাবিত হয়েছে।
একই উপজেলার বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা বাসসকে জানান, টানা বৃষ্টিপাতে জুরাছড়ি, বনযোগীছড়া, মৈদং ও দুমদুম্যা ইউনিয়নে বেশ কয়েকটি বসত ঘর এবং ধানের জমিসহ বিভিন্ন শাক-সবজি পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে। একই সাথে রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়াই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে ৫দিন ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন তাকায় জনজীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে বলে জানান তিনি।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আসমা বাসসকে জানান রাঙ্গামাটি পৌর শহরে বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কায় পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী জনসাধারণকে দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি বলেন, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে এখন পর্যন্ত স্থানীয় লোকনাথ মন্দিরের আশ্রয়কেন্দ্রে ২০ টি পরিবারের ৮২ জন মানুষ অবস্থান করছে।
এছাড়া রাঙ্গামাটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে ১০ পরিবারের ৪৫ জনসহ দুটি আশ্রয় কেন্দ্রে মোট ১২৭ জনের জন্য আজ রাত এবং আগামীকাল সকাল পর্যন্ত খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রে আসা মানুষের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসাসহ ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্ল্যাহ মারুফ বাসসকে জানান, অব্যাহত বৃষ্টির কারনে রাঙ্গামাটিতে সম্ভাব্য যে কোন দুূর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রবল বর্ষণের ফলে যাতে কোন প্রকার প্রাণহাণীর ঘটনা না ঘটে সে জন্য প্রতিটি এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করা হয়েছে এবং যে কোন দুূর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের রেসকিউটি টিমের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক টিমও রেডি রাখা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বাসসকে আরো জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাঙ্গামাটি শহরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গুলোতে সচেতনতামুলক মাইকিং অব্যাহত রাখা হয়েছে এবং পাহাড়ের পাদদেশে থাকা লোকজনকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।