শিরোনাম
ভোলা, ২৯ মে, ২০২৫ (বাসস) : বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট লঘুচাপটি ক্রমান্বয়ে বুধবার রাত থেকেই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে। এর প্রভাবে আজ ভোররাত থেকেই জেলায় ব্যাপক বৃষ্টি ও ঘূর্ণি বাতাস বইছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল জোয়ারের স্রোতে জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমউদ্দিন বাজারের বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়াও বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার কলাতলীতে বেড়ীবাঁধের ব্যাপক ক্ষতিকর খবর মিলেছে।
স্থানীয়রা জানান, তজুমদ্দিন উপজেলা শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে বাড়ীঘর ও ফসলী জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়নবোর্ড ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ সংস্কারে জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গন প্রতিরোধে মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছেন বলে গণমাধ্যমকে অবহিত করেছেন।
ভোলার পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তারা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেড়ীবাঁধগুলোর সার্বিক বিষয়ে তদারকি চালিয়ে যাচ্ছেন।
নদী উত্তাল থাকায়, ভোলার সঙ্গে দেশের সব রুটের লঞ্চ ও ফেরী চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
বিআইডব্লিউটি-এর ভোলার বন্দর কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেন বাসস’কে বলেন, প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ইলিশা নৌ-বন্দরের টার্মিনালের চালা উড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পন্টুন।
তিনি আরো বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত, জেলার সঙ্গে সকল নৌ-রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বাসস’কে জানান, ঝড়ের সার্বিক দুর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলায় ৮৬৯টি আশ্রয়ন কেন্দ্র ও ১৪টি মাটির কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও সিপিপি ও রেডক্রিসেন্টসহ ১৩ হাজার ৮’শ স্বেচ্ছাসেবী ও ৯৭টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় দুর্যোগপূর্ব, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী মোট ৩ ধাপের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মেডিকেল টিম, শুকনো খাবার ও চাল মজুদ রাখার পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটিও বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়াও বিচ্ছিন্ন উপকূলীয় দ্বীপে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীকে নিরাপদে আনতে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মজুদ রাখা হয়েছে ২শ’ ৯১ মেট্রিন টন চাল, দেড় হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য।
পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসসহ সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সতর্ক রাখা হয়েছে।
ভোলা জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বাসস’কে জানান, ভোলা উপকূল এলাকার সমুদ্র বন্দরগুলোতে আজ তিন নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ২৩ দশমিক ৬ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।