বাসস
  ২৮ মে ২০২৫, ২১:২৬

আগামীকাল জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালন করবে বাংলাদেশ

প্রতীকী ছবি। বাংলাদেশ পুলিশ ফেসবুক পেইজ

ঢাকা, ২৮ মে, ২০২৫ (বাসস): অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও আগামীকাল যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালন করবে।

শান্তিরক্ষায় কর্মরত সকল নারী-পুরুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং শান্তিরক্ষায় প্রাণ হারানো ব্যক্তিদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ২০০২ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা অফিসের মতে, এই বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘শান্তিরক্ষার ভবিষ্যৎ’।

দিবসটি উপলক্ষে ঢাকায় সকালে শান্তিরক্ষীদের সম্মানে একটি শোভাযাত্রা বের করা হবে। এতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সকাল ১১টায় চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আহত শান্তিরক্ষীদের সংবর্ধনা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর একটি বিশেষ উপস্থাপনার আয়োজন করা হবে।  

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ঢাকায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী, তিন বাহিনীর প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশের মহাপরিদর্শক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

দিবসটি উপলক্ষ্যে জাতীয় দৈনিকে বিশেষ সাময়িকী ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ টক শো প্রচারিত হবে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন ও অন্যান্য বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর তৈরি তথ্যচিত্র প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় সামরিক ও পুলিশ সদস্যের দিক থেকে অবদান রাখা তৃতীয় বৃহত্তম দেশ। বাংলাদেশ থেকে ৪৪৭ জন নারীসহ ৫ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি সদস্য আবেই, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, সাইপ্রাস, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো, লেবানন এবং দক্ষিণ সুদানে শান্তিরক্ষা মিশনে মোতায়েন রয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বার্তায় বলেন, শান্তিরক্ষীরা আজ জটিল বিশ্বে ক্রমবর্ধমান জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন। আগের চেয়েও বেশি জাতিসংঘকে বিশ্বের প্রয়োজন। জাতিসংঘের এমন শান্তিরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন, যা বর্তমান বাস্তবতা ও আগামীকালের চ্যালেঞ্জের জন্য সম্পূর্ণরূপে সজ্জিত হবে।

গুতেরেস বলেন, আজ আমরা তাদের সেবাকে সম্মান জানাই। আমরা তাদের স্থিতিস্থাপকতা, নিষ্ঠা ও সাহস থেকে অনুপ্রেরণা পাই। আমরা শান্তির জন্য চূড়ান্ত ত্যাগ স্বীকারকারী সকল সাহসী নারী ও পুরুষকে স্মরণ করি। আমরা তাদের কখনই ভুলব না এবং আমরা তাদের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব।

পিস অপারেশনসের আন্ডার-সেক্রেটারি জেনারেল জিন-পিয়ের ল্যাক্রোইক্স বলেন, শান্তিরক্ষীরা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সামর্থ্য। আমাদের শান্তিরক্ষীদের ত্যাগ স্মরণের চেয়েও বেশি কিছু দাবি করে, তারা পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করে।

১৯৪৮ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন তদারকি করতে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েনের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতি তত্ত্বাবধান সংস্থায় পরিণত হয়।

তারপর থেকে বিশ্বজুড়ে ৭১টি অভিযানে বিশ লাখেরও বেশি শান্তিরক্ষী কাজ করেছেন। বর্তমানে আফ্রিকা, এশিয়া, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের ১১টি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে প্রায় ৬৮ হাজার নারী ও পুরুষ সামরিক, পুলিশ ও বেসামরিক কর্মী হিসেবে কাজ করছেন। বর্তমানে ১৯০টি দেশ শান্তিরক্ষা মিশনে ইউনিফর্ম পরিহিত কর্মী দিয়ে অবদান রাখছে।