বাসস
  ২৭ মে ২০২৫, ১৯:৩৭

অন্তর্বর্তী সরকার বাওড়ের জেলেদের সমস্যা সমাধানে প্রাথমিক ধাপ শুরু করতে চায়: ফরিদা আখতার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আজ কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন। ছবি : বাসস

ঢাকা, ২৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার সীমিত সময়ের জন্য কাজ করলেও বাওড়ের জেলেদের সমস্যার সমাধানে প্রাথমিক ধাপ শুরু করতে চায়। 

তিনি জেলেদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনাদের দাবির বিষয়ে যেটুকু শুনে গেলাম, তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পৌঁছানো হবে। প্রকৃত মৎসজীবীদের মাঝে হাওড়-বাওড়ের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আমি ভূমি মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সব দপ্তরে কথা বলব।’

আজ কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ঝিনাইদহ জেলার স্থানীয় জেলে ও বাওড় মৎস্যজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, মাছ আমাদের খাদ্য তালিকায় আমিষের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস এবং এটি শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দিয়ে থাকে। 

মাছ প্রকৃতির দান উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেলেরাই বুঝতে পারে মাছ রক্ষা করে কোন সময় মাছ ধরা যাবে, তাই ‘জাল যার জলা তার’ এ দাবী বাস্তবায়ন করতে হবে। 
তিনি আরো বলেন, মাছ আমাদের সম্পদ, আর তা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। এ সম্পদ বংশ পরম্পরায় জেলে সম্প্রদায় রক্ষা করে আসছেন। মাছ ধরতে দক্ষতা অর্জন দরকার, এখানে পুঁজির কোন ভূমিকা নাই। এখানে দক্ষতাই হলো পুঁজি।

উপদেষ্টা বলেন, ‘জাল যার জলা তার’- এই নীতি বাস্তবায়নে আমরা কাজ করব। তরুণ প্রজন্ম আন্দোলনের মাধ্যমে সমাজের সব বৈষম্য দূর করবে। বাওড়পাড়ের বাসিন্দাদের কাছে বাওড়ের প্রকৃত মালিকানা ফিরিয়ে দিয়ে তাদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’
রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, হাওড়-বাওড়ের ইজারা প্রথা বাতিলে স্থানীয় জেলেদের প্রতি শুধু সংহতি প্রকাশ করলেই হবে না, জাতীয় পর্যায়েও সংহতি প্রকাশ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে মৎস্যজীবীরা বলেন, তাদের অনুকূলে ও জাতীয় স্বার্থে জলমহাল ব্যবস্থাপনা আইন সংশোধন করতে হবে। মৎস্যজীবীরা বাঁওড় ও জলমহালসমূহের ইজারা পদ্ধতি পুরোপুরি বাতিল করে, জেলেদের ন্যায়সঙ্গত মালিকানার স্বীকৃতি দিয়ে সমাজভিত্তিক সমবায় মালিকানা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়ালের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. মোবারক হোসেন, বাংলাদেশ ক্ষেত মজুর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ড. মো. ফজলুর রহমান, স্থানীয় মৎস্যজীবী নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও সুধীজন এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সকালে উপজেলার বলুহর বাওড় পরিদর্শন করেন উপদেষ্টা। সে সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আওয়াল, মজুর সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান ও মৎস্য অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ মৎস্য কর্মকর্তা মোতালেব হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।