বাসস
  ১৩ মে ২০২৫, ১৯:১১

সবজির দাম কমায় স্বস্তিতে রাজশাহীর ক্রেতারা

ছবি : বাসস

রাজশাহী, ১৩ মে, ২০২৫ (বাসস):  রাজশাহী মহানগরীর বাজারগুলোতে ক্রমেই কমছে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সবজির দাম। কম মূল্যে চাহিদা অনুযায়ী সবজি কিনতে পারায় স্বস্তিতে রয়েছেন এখানকার ক্রেতারা।

শুধু মহানগরীর বাজারগুলোতেই নয়, আশপাশের উপজেলার বাজারগুলোতে আরও কম দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। প্রায় প্রত্যেকটি সবজির দাম পূর্বের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। আমদানি বাড়লে দাম আরো কমবে বলেও মন্তব্য বিক্রেতাদের।

আজ (মঙ্গলবার) সকালে সরজমিনে রাজশাহী মহানগরীর কাঁচাবাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, পটল বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি, ঢেঁড়শ ২৫ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৩০ টাকা থেকে ৩৫ টাকা কেজি, করলা ৩৫ থেকে ৪০, লাউ (ধরণ ভেদে) প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকা, পুইশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি, চাল কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা (প্রতি পিস), বেগুন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, আলু ১৫ থেকে ১৬ টাকা, সবুজ ও লাল শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা কেজি, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, ডুমুর ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি, কাঁচা কলা ২০ টাকা হালি, কাঁকরোল ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা কেজি ও পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

প্রত্যেকটি সবজির দাম ক্রেতাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে হওয়ায়, ক্রেতারা বাজার করতে এসে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এবং সব সময় যাতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে সেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দেশের সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।

নগরীর দাসপুকুর এলাকার বউবাজারে সবজি কিনতে আসা সুমাইয়া পারভিনের কাছে সবজির দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি বাসস-কে বলেন, ‘এখন সবজির দাম ঠিক আছে। প্রত্যেকটি সবজির দাম খুব কম। আমরা কিনে খেতে পারছি। এ রকম দাম থাকলে, সবাই প্রয়োজন মতো সবজি কিনে খেতে পারবে। আমি প্রায় সব ধরনের সবজিই কিনেছি।’

মকবুল নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘সবজির দাম কমে যাওয়ার কারণে, আমাদের মতো কম আয়ের মানুষের খুব উপকার হয়েছে। আমরা গত কয়েকদিন ধরেই ভালোমতো সবজি কিনে খেতে পারছি।’ 

এ রকম দাম সারা বছর রাখার ব্যাপারেও তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

নগরীর কোর্ট স্টেশনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রত্যেক ধরনের সবজির দাম এখানে অনেক কম। তাই ক্রেতারা ব্যাগ ভরে সবজি কিনতে পারছে। 

এখানে সবজি কিনতে আসা রবিউল নামে এক ক্রেতা বাসস-কে বলেন, ‘সবজির দাম বাড়লে আমরা বিপাকে পড়ি। কারণ তখন আয়ের সাথে ব্যয়ের হিসেব মেলাতে পারি না। পরিবারের চাহিদা অনুযায়ী কোনো কিছুই কিনতে পারি না। ভালো মন্দ খাবার তো দূরে থাক, সবজি কিনতেই হিমশিম খেতে হয়। এখন দাম নাগালের মধ্যে হওয়ায় কোনও সমস্যা হচ্ছে না।’

নগরীর প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজার কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়েও একই  চিত্র  পাওয়া গেছে। আয়াতুল্লাহ নামের এক ক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘দাম কম হওয়ায় বাজার করতে ভালো লাগছে। আমার মতো অনেক মানুষ ইচ্ছেমতো সবজি কিনতে পারছে।’

রাজশাহীতে যে তীব্র তাপদাহ প্রবাহিত হয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না, আর এই তীব্র গরমে মানুষকে স্বস্তি দেয় একগ্লাস লেবুর শরবত। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সবজি ছাড়াও এখানে এই অতি প্রয়োজনীয় লেবুও অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর বেশির ভাগ বাজারেই লেবু বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৭ টাকা হালি। যে লেবুর দাম কয়দিন আগেও ছিল আকাশছোঁয়া। 

এক লেবু ক্রেতা বলেন, ‘গরমের সময় দাম কম হয়ে ভালোই হয়েছে। মানুষ এখন বেশী করে লেবু কিনে শরবত তৈরি করে খেতে পারছে।’

সজিব নামের এক সবজি বিক্রেতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘পাইকারি বাজারে পর্যাপ্ত আমদানি থাকায় সবজির দাম কমেছে। আমরা খুচরা বিক্রেতারা পাইকারিভাবে পণ্য কম দামে কিনতে পারলে, কম দামেই তা বিক্রি করি।’ তবে দাম আরো কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান। 

কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রির কোনও সুযোগ নেই, তাই খুচরা বাজারে কম দামেই সবজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন এই সবজি বিক্রেতা।

পাইকারি সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, কৃষকের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সবজি আসছে। তাই এখন কোনো ঘাটতি নেই। বরং চাহিদার তুলনায় আমদানি বেশি বলেই দাম কমেছে। আমদানি যদি আরো বাড়ে, তবে দাম আরো কমবে বলেও জানান তিনি।

সবজিতে যেন কোনো সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান সবজি ব্যবসায়ীদের।