শিরোনাম
ঢাকা, ২১ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : সর্বক্ষেত্রে সর্বস্তরে নারীর প্রতি বৈষম্য বিলুপ্তি ও নারী পুরুষের সমতা অর্জনের লক্ষ্যে পদক্ষেপ চিহ্নিতকরণের সুপারিশ করেছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন।
প্রধান উপদেষ্টা প্রতিবেদন পেয়ে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করতে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের যে-সব সুপারিশ বাস্তবায়নযোগ্য তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর কাছে নেতারা তাদের সুপারিশসহ প্রতিবেদন পেশ করেন।
সুপারিশমালায় বলা হয়- দারিদ্র্য-হ্রাসে টেকসই সামাজিক সুরক্ষার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদে করণীয় বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘সামাজিক সুরক্ষার সুবিধাভোগীদের শনাক্ত করার জন্য একটি একীভূত নিবন্ধন ব্যবস্থা করা, অধিকতর তথ্যভিত্তিক বাছাই প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করা এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করা। সামাজিক নিরাপত্তা ভাতার পরিমাণ নির্ধারণে মূল্যস্ফীতির প্রভাব বিবেচনায় নেওয়া এবং শহরাঞ্চলে সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও সকল সহায়তা সম্মানজনক পদ্ধতিতে সরবরাহ করা। জীবনচক্র ভিত্তিক সুরক্ষা বরাদ্দ বৃদ্ধি, বেকারত্ব বীমা চালু, দুর্ঘটনা বীমা সম্প্রসারণ, নারীদের প্রসূতি ও প্রসবজনিত সেবা সুবিধা এবং বিধবা ও বয়স্ক নারীদেরকে সার্বজনীন অবসর ভাতার আওতায় আনা। ধাপে ধাপে সামাজিক সুরক্ষা ভিত তৈরি হবে, যা জীবনচক্র ভিত্তিক মৌলিক চাহিদা, স্বাস্থ্যসেবা, আয় নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করবে, নগর দারিদ্র্যদের জীবনচক্র ভিত্তিক চাহিদা মেটাতে নমনীয় সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ও দরিদ্র নারীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
উল্লেখ্য, সংস্কার কমিশন ১৫টি বিষয়ে সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। বিষয়গুলো হচ্ছে- সংবিধান, আইন ও নারীর অধিকার, সমতা ও সুরক্ষার ভিত্তি, নারীর অগ্রগতির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা ও জাতীয় সংস্থাসমূহ, নারীর স্বার্থ ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় পর্যায়ের উন্নয়ন, নারী ও মেয়ে শিশুর জন্য সহিংসতামুক্ত সমাজ, জনপরিসরে নারীর ভূমিকা: জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে, জনপ্রশাসনে নারীর অংশগ্রহণ, নারীর অগ্রগতির জন্য শিক্ষা, প্রযুক্তি ও দক্ষতা বৃদ্ধি, সকল বয়সী নারীর জন্য সুস্বাস্থ্য, অর্থনীতিতে অংশগ্রহণ ও সম্পদের অধিকার, শ্রম ও কর্মসংস্থান, নারী শ্রমিকের নিরাপদ অভিবাসন, দারিদ্র হ্রাসে টেকসই সামাজিক সুরক্ষা, গণমাধ্যমে নারীর অংশগ্রহণ, চিত্রায়ণ ও প্রকাশ, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিতে নারীর অন্তর্ভুক্তি ও বিকাশ এবং দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনে নারী।
চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত এ কমিশনের মেয়াদ রয়েছে। গতবছরের নভেম্বরে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ সংস্কার কমিশন মোট ৪৩টি নিয়মিত বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
নারী অধিকার, উন্নয়ন সংস্থা, শ্রমিক সংগঠন, পাহাড় ও সমতলের অধিবাসী এবং পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ৩৯টি পরামর্শ সভা করেছে কমিশন। আর অন্যান্য সংস্কার কমিশনের সঙ্গে ৯টি সভায় মিলিত হয়েছে।