বাসস
  ০৯ আগস্ট ২০২৫, ১০:১৯

আইন মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রম গতিশীল হয়েছে

মাহমুদুল হাসান রাজু

ঢাকা, ৯ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছরে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দৈনন্দিন কার্যক্রমে অভূতপূর্ব গতি সঞ্চার হয়েছে। এ সময়ে মন্ত্রণালয় ১,২৮৩টি ফাইল নিষ্পত্তি করেছে, যা আগের সরকারের একই সময়ে নিষ্পত্তিকৃত ৮৩৪টি ফাইলের তুলনায় অনেক বেশি।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘গত বছর আমরা ১,২৮৩টি ফাইল নিষ্পত্তি করেছি। মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দফতর ও সংস্থায় ৩৯১টি আইনগত মতামত দেওয়া হয়েছে, যা আগের বছরের ১৮০টি মতামতের দ্বিগুণেরও বেশি।’

আগের প্রশাসনের তুলনায় বর্তমান মন্ত্রণালয় দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সরকারি সংস্থাগুলোতে বিস্তৃত আইনগত সহায়তা এবং সত্যায়ন ও নথি যাচাইয়ের মতো জনসেবায় গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি প্রদর্শন করেছে।

মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, গত এক বছরে ১,৫৯,৫৪৪টি সনদপত্র, হলফনামা, দলিল ইত্যাদি নথি সত্যায়িত হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিগত বছরে আইন প্রণয়নের নানা বিষয়ে রেকর্ড ১২টি স্টেকহোল্ডার পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা অংশগ্রহণমূলক শাসন ও আইন প্রণয়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করেছে। এছাড়া, মন্ত্রণালয় নবগঠিত একাধিক কমিশনকে (যেমন, গুম তদন্ত কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) সেক্রেটারিয়াল সহায়তাও প্রদান করেছে।’

মন্ত্রণালয় গত এক বছরে বিভিন্ন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে ৪,৮৮৯ জন সরকারি আইন কর্মকর্তা এবং অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তরে ২৭৪ জন আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে। পাশাপাশি, আপিল বিভাগে ৫ জন বিচারপতি ও হাইকোর্ট বিভাগে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগে সহায়তা করেছে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জন্য প্রসিকিউটর ও বিচারক নিয়োগ দিয়েছে।

এদিকে, আইন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. রেজাউল করিম জানান, গত এক বছরে মন্ত্রণালয়ের ডিজিটাল রূপান্তরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বর্তমানে মন্ত্রণালয়ের ৫০ শতাংশ ফাইল ‘ডি-ডকুমেন্টস’ নামের ডিজিটাল ফাইল ব্যবস্থাপনা সিস্টেমে প্রক্রিয়াকরণ করা হচ্ছে, যা প্রশাসনিক দক্ষতা ও স্বচ্ছতায় এক বড় মাইলফলক। এছাড়া, মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন সেবা পুরোপুরি অনলাইনভিত্তিক হয়েছে, ফলে জনগণ ঘরে বসেই এ সেবা নিতে পারছেন।’

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের গণঅভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত অপরাধের বিচার নিশ্চিত ও দ্রুততর করতে মন্ত্রণালয় একটি বিশেষ প্রসিকিউশন মনিটরিং সেল গঠন করেছে।

এই বিশেষ ইউনিটটি রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এসব মামলার বিচার প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে তদারকি করছে, যাতে ভুক্তভোগীদের জন্য যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়।