শিরোনাম
ঢাকা, ২ জুন, ২০২৫ (বাসস): ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম বাজেটে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য ৫ হাজার ৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৩৮ কোটি টাকা বেশি। আজ সোমবার বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত এক বক্তৃতায় এ বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থ উপদেষ্টা।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ তার বক্তৃতায় বলেন, নারীর অধিকার, সুরক্ষা এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা নিশ্চিত করা আমাদের সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। নিরাপত্তা নিশ্চিতে ১ হাজার ৩৯৯ জন নারীর জন্য আবাসন সুবিধা প্রদান করা হয়েছে। নারী প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন জাতীয় একাডেমির মাধ্যমে এবং উপজেলা পর্যায়ে নারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে নারীদের জন্য দক্ষতাভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জয়িতা ফাউন্ডেশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ৪৫৫ জন নারী উদ্যোক্তাকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ভিডব্লিউবি কর্মসূচির আওতায় ২০ হাজার নির্বাচিত নারীকে ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রতিষ্ঠা প্রকল্পের আওতায় ৭ লাখ ৩২ হাজার ৪৫০ কিশোর-কিশোরীকে বাল্যবিবাহ রোধ, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার (এসআরএইচআর) সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শাখায় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি করে আলাদা ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়াও ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নারীদের সহজে ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে ৩০ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম চালু করা হয়েছে, যার আওতায় নারীরা ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন ঋণ পাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি পরবর্তী অর্থবছরে নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন জোরদার ও তাদের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে ১২৫ কোটি টাকার একটি তহবিল বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, বর্তমান অর্থবছরে দেশের প্রায় ৪০ হাজার শিশু তাদের শারীরিক, মানসিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সাংস্কৃতিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ পেয়েছে । এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে সৃজনশীলতা, দেশপ্রেম ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শিশু শহীদদের ৮৪টি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে এবং আহত শিশুদের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিশু ডে-কেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে ১ হাজার ৭০০ শিশুকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে এবং অন্য একটি প্রকল্পের অধীনে ২০টি ডে-কেয়ার সেন্টারে ৬ মাস থেকে ৬ বছর বয়সী ১ হাজার ২০০ শিশুকে সেবা দেওয়া হচ্ছে।