শিরোনাম
ঢাকা, ৪ জুন, ২০২৫ (বাসস): কসমেটিকস পণ্যের ট্যারিফ ভ্যালু আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শুল্কায়নের দাবি জানিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এ খাতের বাণিজ্য সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশের (এএসবিএমইবি) নেতারা সরকারের কাছে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, এ খাতে যথাযথ নীতি সহায়তা পেলে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি বহু লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
কালার কসমেটিকস পণ্য দেশে আমদানি পর্যায়ে শুল্কায়নের ক্ষেত্রে যে নীতি প্রচলিত রয়েছে তা দেশীয় উৎপাদন ও শিল্প বিকাশে অন্যতম বাধা উল্লেখ করে তারা বলেন, কালার কসমেটিকস পণ্য সামগ্রীর ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে সাথে সামঞ্জস্য রেখে নেটওয়েট এর পরিবর্তে গ্রসওয়েট বিবেচনায় নিয়ে কাস্টমস শুল্কায়ন করা আবশ্যক।
আজ এক বিবৃতিতে এএসবিএমইবি নেতারা
বলেন, অর্থ উপদেষ্টার প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট ২০২৫-২০২৬ অনুসারে প্রতি কেজি (নেট ওয়েট) কালার কসমেটিকস পণ্য সামগ্রী কাস্টমস শুল্কায়ন করা যায় ন্যূনতম ট্যারিফ মূল্যে ৪০ ডলার থেকে শুরু করে ১০ ডলার পর্যন্ত। উদাহরণ হিসেবে লিপস্টিক (এইচএস কোড ৩৩০৪.১০.০০) নেটওয়েট প্রতি কেজি ক্রয় মূল্য ৪০ ডলার বিবেচনায় নিয়ে শুল্কায়ন করা হয়। প্রতি পিস লিপস্টিকের গড় নেটওয়েট যদি ৪.০০ গ্রাম হয় তাহলে প্রতি কেজিতে লিপস্টিকের সংখ্যা হয় ২৫০ পিস, সে হিসেবে ন্যূনতম ট্যারিফ ভ্যালু অনুযায়ী প্রতি পিসের মূল্য দাঁড়ায় শূন্য দশমিক ১৬ ডলার বা ২০ টাকা। এই মূল্যে আমদানিকৃত প্রতি পিস লিপস্টিকের বিপরীতে সরকার কাস্টমস ডিউটি পেয়ে থাকে মাত্র ৩১ দশমিক ৪৬ টাকা। ক্রয়মূল্য ও কাস্টমস ডিউটিসহ প্রতি পিস আমদানিকৃত লিপস্টিকের ল্যান্ডেড কস্ট দাঁড়ায় মাত্র ৫১ দশমিক ৪৬ টাকা। অথচ দেশের বাজারে কাস্টমারের কাছে আমদানিকৃত এসব লিপস্টিক বিক্রয় হয় ন্যূনতম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। এই হিসাব থেকে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, সরকার আমদানিকৃত কালার কসমেটিকস থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে।
কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে মোটামুটি গুণগতমান সম্পন্ন প্রতি পিস লিপস্টিকের প্রকৃত ক্রয় মূল্য ন্যূনতম ১ ডলার থেকে শুরু করে ১০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। অথচ বাংলাদেশে যে কোন মানের লিপস্টিক কাস্টমস এস.আর.ও. নং ২২৬-আইন/২০২৫/৪৮ অনুসারে প্রতি কেজি (নেট ওয়েট) ২০ ডলারে শুল্কায়ন করা সম্ভব। প্রস্তাবিত বাজেটে তা ৪০ ডলার করা হলেও আন্তর্জাতিক বাজারের ন্যূনতম মূল্যের সাথে মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
এএসবিএমইবি’র সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দীন বলেন, বৈষম্যমূলক নীতির কারণেই মূলত: দেশে এতদিন কসমেটিকস ইন্ডাস্ট্রি গড়ে ওঠেনি। সম্ভাবনাময় এই ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠলে একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব পাবে অপরদিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়া দেশে উৎপাদন বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় রোধ করে বিদেশে রফতানির মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।