শিরোনাম

ঢাকা, ২২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. সাব্বির ফয়েজ বলেছেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত হচ্ছে, দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করছে কিন্তু সেই সংবাদ জনমানুষের কাছে পৌঁছায় না।
অপরাধী যেই হোক না কেন তার যথোচিত বিচারও যেমন হতে হবে, বিচার যে হচ্ছে সেই সংবাদটিও জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে।
আজ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিচারক সাব্বির ফয়েজ আগত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, মানুষ আপনাদের প্রসংশা করার জন্য মুখিয়ে আছে, শুধু আপনাদের কাছে আন্তরিক ব্যবহার ও সহযোগিতা চায়, হাসি মুখে দায়িত্ব পালন করুন সেটা চায়, মানুষ আপনার ক্ষমতা দেখতে চায় না, দায়িত্ব পালন দেখতে চায়। তিনি কনফারেন্সে আলোচ্য বিষয়গুলো কার্যকর করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক। অতিথিবৃন্দের পরিচয় পর্ব শেষে মূল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি মো. সাব্বির ফয়েজ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন- অনুষ্ঠানের সভাপতি চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি অনুষ্ঠানে আগত সম্মানিত অতিথিবৃন্দকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, জুলাই গণঅদ্ভ্যুত্থানের পরে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত হয়েছে। তথাপি সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে হাজিরা দিয়ে যাওয়ার পথে একজন ব্যাক্তিকে আদালত প্রঙ্গনের অদূরেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক, আদালতে আসা-যাওয়ার পথে বিচারপ্রার্থী জনগণ, বিজ্ঞ বিচারক ও আইনজীবীবৃন্দ যদি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন, তবে ন্যায় বিচার প্রশাসন পরিচালনা ব্যাহত হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান তার বক্তৃতায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের আহ্বান জানিয়েছেন বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির সাম্প্রতিক সংশোধনীর মাধ্যমে ১৭৩এ ধারাটি যুক্ত করার একটি ভালো উদ্দেশ্য রয়েছে, কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি এই ধারাটির কিছু অপব্যবহার হচ্ছে। সেই বিষয়ে প্রত্যেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। ভিকটিমদের জখমি সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে এবং ডাক্তার সাক্ষীদের আদালতে উপস্থাপনের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরো আন্তরিক ভূমিকা পালন করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মামলা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করার অনুরোধ করেন। আসামিদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনের আহ্বান করেন।
ঢাকা বারের সভাপতি এডভোকেট মো. খোরশেদ মিয়া আলম ন্যায় বিচার নিশ্চিতে সবাইকে ভালোভাবে কাজ করার অনুরোধ করেন।
কনফারেন্সে আলোচকবৃন্দ সমন/ওয়ারেন্ট/হুলিয়াও ক্রোকি পরোয়ানা তামিল, যথাসময়ে সাক্ষীদের হাজির করা, আদালত চত্বরের নিরাপত্তা বিধান, ইনকোয়ারি বা ইনভেস্টিগেশনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, সময়মতো ইনজুরি সার্টিফিকেট, ময়না তদন্ত, ফরেনসিক ও ভিসেরা রিপোর্ট প্রাপ্তি, পুলিশ রিমান্ড/অন্তর্বর্তী তদন্ত প্রতিবেদন, সময়মতো মালখানা থেকে আদালতে আলামত উপস্থাপন, বিচারিক অভিগম্যতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
ফৌজদারী কার্যবিধি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের সাম্প্রতিক সংশোধনী সমূহ নিয়ে সম্মেলনে বিশেষ পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. এহসানুল ইসলাম।
চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন ডিসি ক্রাইম, ঢাকা, ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি, ডিসি ট্রাফিক (লালবাগ) ও বিভিন্ন পর্যায়ের পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাগণ। এ ছাড়া সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও নিটোর হাসপাতালের প্রতিনিধিবৃন্দ।