বাসস
  ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২০:২৩

গাজা সম্মেলনে অংশ না নিয়ে সুযোগ হারানোর সমালোচনা প্রত্যাখ্যান ইরানের 

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : গাজা ইস্যুতে মিশরের অবকাশ কেন্দ্র শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনে অংশ না নিয়ে ইরান কূটনৈতিক সুযোগ হারিয়েছে বলে যে সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ইরান।

তেহরান থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

সম্প্রতি মিশরের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে সোমবার শারম এল-শেখে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে অংশ না নেওয়ায় ইরানের সমালোচনা করেছে দেশটির গণমাধ্যম। ওই সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মূখ্য ভূমিকা পালন করেছেন।

মঙ্গলবার সংস্কারপন্থী ‘দৈনিক শার্ঘ’ লিখেছে, ‘সম্মেলনে অংশ না নেওয়া ইরানের পররাষ্ট্রনীতিতে নিষ্ক্রিয়তা, উদ্যোগহীনতা ও সুযোগ হারানোর পরিচায়ক।’

‘হাম মিহান পত্রিকা’ সাবেক কূটনীতিক ফেরিদুন মজলেসির উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ‘ইরানের অংশগ্রহণ করা উচিত ছিল। কারণ ফিলিস্তিন প্রশ্ন ও গাজার ভবিষ্যৎ ইরানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।’

ইরান হামাসকে সমর্থন করে, যারা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার পর থেকে গাজায় ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িত ছিল। এছাড়া ইরান ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেয় না এবং ইসরাইলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষও।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ইরান বলেছে, যেসব পক্ষ ইরানের জনগণের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং এখনো হুমকি ও নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে আমরা কোনো আলোচনায় অংশ নিতে পারি না।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই ইরানের অবস্থান তুলে ধরে বলেছেন, ‘যথাযথ হিসাব-নিকাশ ছাড়া এমন বৈঠকে অংশ নেওয়া দেশের অবস্থানের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।’

বাকাইকে উদ্ধৃত করে ‘তাসনিম বার্তা’ সংস্থা জানিয়েছে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ ও অপরাধমূলক হামলার শিকার হয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ও সহযোগিতায় এই হামলায় জায়নবাদী শাসকও যুক্ত ছিল।

তিনি আরো বলেছেন, ‘যে পক্ষ এমন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের গর্ব করে, তাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ না নেওয়াই স্বাভাবিক।’

গত জুনে ইসরাইল ইরানে নজিরবিহীন বিমান হামলা চালায়। তাতে যুক্তরাষ্ট্রও স্বল্প সময়ের জন্য যোগ দেয় এবং ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায়।

১২ দিনব্যাপী সেই যুদ্ধে ইসরাইল পরমাণু ও সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি আবাসিক এলাকায়ও হামলা চালায় এবং ইরানের হিসাবে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। এছাড়া ইরানের বেশ কয়েকজন পরমাণু বিজ্ঞানীও নিহত হয়।

এর জবাবে ইরান ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়, যাতে ডজন খানেক মানুষ নিহত হয়। গত ২৪ জুন ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

শারম আল-শেখ শহরে সম্মেলনে ট্রাম্প, মিশর, কাতার ও তুরস্কের নেতারা গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি স্থায়ী করার একটি ঘোষণায় সই করেন।

তবে ওই ঘোষণায় ইসরাইল ও তার প্রতিবেশি দেশগুলো বিশেষ করে ফিলিস্তিনের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার ভবিষ্যৎ পথনকশা সম্পর্কে তেমন কোনো বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করা হয়নি।