শিরোনাম

ম্যানিলা, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি বিচে সংঘটিত গুলিবর্ষণের সঙ্গে জড়িত দুই ব্যক্তি ফিলিপাইনে অবস্থানকালে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন— এমন দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই বলে জানিয়েছে ফিলিপাইন সরকার।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোসের মুখপাত্র ক্লেয়ার কাস্ত্রো বলেন, ‘ফিলিপাইনকে আইএসআইএস-এর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করার মতো বিভ্রান্তিকর ও অতিরঞ্জিত বক্তব্য প্রেসিডেন্ট দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছেন।’
তিনি জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতি পাঠ করে বলেন, ‘দেশটি সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত হয়েছে, এমন দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ‘বন্ডি বিচ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা ফিলিপাইনে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন— এমন কোনো যাচাইকৃত প্রতিবেদন বা নিশ্চিত তথ্য নেই।’
এর আগে মঙ্গলবার ফিলিপাইনের অভিবাসন দপ্তর নিশ্চিত করে জানিয়েছে যে সজিদ আকরাম ও তার ছেলে নাভিদ ১ নভেম্বর ফিলিপাইনে প্রবেশ করে দক্ষিণাঞ্চলীয় দাভাও প্রদেশে যান।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
এই দু’জনই সিডনির বন্ডি বিচে একটি হানুক্কা উদ্যাপনে গুলি চালিয়ে ১৫ জনকে হত্যা ও আর আরও বেশ কয়েকজনকে আহত করেছে।
দাভাও যে দ্বীপে অবস্থিত, সেই মিনদানাওতে দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ইসলামপন্থী বিদ্রোহের ইতিহাস রয়েছে। এই সফরে ওই দুই হামলাকারী কোনো চরমপন্থী গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল কি-না, অস্ট্রেলীয় কর্তৃপক্ষ সে ব্যাপারে তদন্ত করছে ।
তবে ফিলিপাইনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, মারাউই অবরোধের পর থেকে মিনদানাওয়ে সক্রিয় সশস্ত্র মুসলিম গোষ্ঠীগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
তারা আরও জানায়, প্রো-ইসলামিক স্টেটের মাউতে ও আবু সায়্যাফ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পাঁচ মাসের যুদ্ধে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। এছাড়াও ভয়াবহ ওই যুদ্ধে আরও কয়েক লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
ফিলিপাইন সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল ফ্রান্সেল পাডিলা বুধবার সকালে বলেন, ‘২০২৪ সালের শুরু থেকে বড় কোনো সন্ত্রাসী অভিযান বা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের রেকর্ড নেই।’
তিনি আরও বলেন, বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ‘বিচ্ছিন্ন’ এবং ‘নেতৃত্বহীন’ অবস্থায় রয়েছে।
কর্নেল জার্কসেস ত্রিনিদাদ জানান, বাবা-ছেলের নভেম্বরের সফরে উল্লেখযোগ্য প্রশিক্ষণ নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত সময় ছিল না। তিনি বলেন, ‘মাত্র ৩০ দিনে প্রশিক্ষণ নেওয়া সম্ভব নয়, বিশেষ করে অস্ত্রচালনা (মার্কসম্যানশিপ) প্রশিক্ষণ।’
তবে ম্যানিলাভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক রোমেল বানলাওই এএফপিকে বলেন, অনেক বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘পালিয়ে’ থাকলেও তারা পুরোপুরি নির্মূল হয়নি।
তার ভাষ্য মতে, ‘কেন্দ্রীয় মিনদানাওতে এখনো সক্রিয় অনেক প্রশিক্ষণ শিবির রয়েছে। সেগুলো বিলুপ্ত করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, দুর্বল হলেও এখনও এ সব গোষ্ঠীর ‘স্থানীয় ও বৈশ্বিক অনলাইন যোগাযোগ’ বজায় আছে।