শিরোনাম

ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : কানাডার গবেষকরা মেরু ভালুকের বিরল দত্তক গ্রহণের একটি ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বন্য পরিবেশে একটি স্ত্রী মেরু ভালুক নিজের গর্ভের নয় এমন একটি শাবকের যত্ন নিচ্ছে।
মন্ট্রিয়াল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
কানাডার পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞানী ইভান রিচার্ডসন বলেন, মেরু ভালুকের মধ্যে শাবক দত্তক নেওয়ার ঘটনা তুলনামূলকভাবে বিরল। তবে, গত ৪৫ বছরে আমাদের গবেষণা এলাকায় এ ধরনের ১৩টি ঘটনা নথিভুক্ত করেছি।

ম্যানিটোবার চার্চিল এলাকায় ওয়েস্টার্ন হাডসন বে বরাবর বার্ষিক মেরু ভালুকের অভিবাসনের সময় দত্তক নেওয়া শাবকের যত্ন নিতে থাকা একটি ভালুকের সেই দৃশ্য ধারণ করা হয়।
এলাকাটি ‘বিশ্বের মেরু ভালুকের রাজধানী’ নামে পরিচিত।
গবেষকরা এর আগে বসন্তকালে ওই মা ভালুকটির মুখোমুখি হন, যখন সে তার প্রসূতি গুহা ছেড়ে বের হচ্ছিল। তখন তার সঙ্গে ছিল মাত্র একটি শাবক, যার কানে ট্যাগ লাগানো ছিল।
এএফপিকে রিচার্ডসন জানান, কয়েক সপ্তাহ আগে গবেষকরা একই মা ভালুকের দেখা পান। তবে, এবার তার সঙ্গে ছিল দ্বিতীয় একটি শাবক, যার কানে কোনো ট্যাগ ছিল না।
তিনি আরও বলেন, পরে তথ্য পর্যালোচনা করে, আমরা বুঝতে পারি যে—ওই মা ভালুক একটি দ্বিতীয় শাবক দত্তক নিয়েছে।
গবেষকদের ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বরফে ঢাকা বিস্তীর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করছে দুই শাবক, আর তাদের পেছনে পায়চারি করছে মা ভালুক।
একটি দৃশ্যে দেখা যায়, একটি শাবক তাড়াহুড়ো করে অন্যদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে।

দুই শাবকের বয়স বর্তমানে ১০ থেকে ১১ মাস এবং তারা সম্ভবত প্রায় আড়াই বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের সঙ্গেই থাকবে।
গবেষকদের কাছে এখনো দত্তক নেওয়া শাবকটিকে জন্ম দেওয়া মায়ের পরিণতি সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই।
তবে রিচার্ডসনের মতে, মাতৃত্বসুলভ সুরক্ষা পাওয়া শাবকটির প্রাপ্তবয়স্ক বয়স পর্যন্ত টিকে থাকার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, এটা সত্যিই একটি হৃদয়ছোঁয়া ঘটনা যে স্ত্রী ভালুকটি শাবকটির দেখভাল করছে এবং এতে শাবকটির বেঁচে থাকার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে।
রিচার্ডসন বলেন, এই স্ত্রী মেরু ভালুকগুলো অসাধারণ মা। তারা স্বভাবগতভাবেই সন্তান লালন-পালনের জন্য প্রস্তুত থাকে। যদি কোনো একা শাবক কান্নাকাটি করতে করতে ঘুরে বেড়ায়, তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাকে নিজেদের তত্ত্বাবধানে নিয়ে নেয়।