শিরোনাম
ঢাকা, ৯ জুন, ২০২৫ (বাসস): কয়লার ওপর নির্ভরশীলতার কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার অর্থনীতি বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় ক্ষতির মুখে পড়তে পারে এবং হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হারানোর ঝুঁকি রয়েছে।
কারণ, বিশ্বজুড়ে ক্রেতা দেশ ও কোম্পানিগুলো এখন কার্বনমুক্ত পণ্যের দিকে ঝুঁকছে। সোমবার এসব তথ্য জানিয়ে সতর্ক করে নট জিরো ট্র্যাকার নামের একটি জলবায়ু পর্যবেক্ষক সংস্থা।
জোহানেসবার্গ থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
আফ্রিকার সবচেয়ে শিল্পোন্নত এই দেশটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ দূষণকারীও। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় ৮০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন কয়লার ওপর নির্ভরশীল।
চারটি অলাভজনক সংস্থার যৌথ উদ্যোগে গঠিত নেট জিরো ট্র্যাকার জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে কোম্পানিগুলো
তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা কার্বনমুক্ত করছে এবং বিভিন্ন দেশ উচ্চ কার্বন নির্গমনকারী পণ্যে শুল্ক আরোপ করছে।
এমন পরিস্থিতি দক্ষিণ আফ্রিকাকে ‘অন্যদের তুলনায় বেশি ঝুঁকিপূর্ণ’ করে তুলছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দক্ষিণ আফ্রিকার মোট রপ্তানির ৭৮ শতাংশ ১৩৯টি দেশে হয়ে থাকে। যার মূল্য প্রায় ১৩৫ বিলিয়ন ডলার। এই রপ্তানির সঙ্গে প্রায় ১২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। প্রতিটি দেশই ইতোমধ্যে ‘নেট জিরো লক্ষ্য’ গ্রহণ করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ আফ্রিকা যদি তার রপ্তানি শৃঙ্খলা কার্বনমুক্ত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা এই বাজারের একটি বড় অংশ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মসংস্থান দুটোই হারাতে পারে।
তবে, সংগঠনটি বলেছে, দক্ষিণ আফ্রিকা চাইলে এই পরিস্থিতি এড়াতে পারে। দেশটি যদি দ্রুত কয়লার ব্যবহার কমায় এবং স্বল্প দূষণকারী পণ্যের যোগানদাতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে তাহলে এই সমস্যায় পড়বে না।
নেট জিরো ট্র্যাকার প্রকল্পের প্রধান জন ল্যাং বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এই পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ রয়েছে। সেগুলো হল, নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদ এবং বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণী ফোরামে অংশগ্রহণ।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার স্বল্প দূষণকারী পণ্যের যোগানদাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।’
ডিকার্বনাইজেশনের (কার্বন নির্গমন কমানো) অন্যতম বড় চালিকাশক্তি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘কার্বন বর্ডার অ্যাডজাস্টমেন্ট মেকানিজম (সিবিএম)’।
২০২২ সালে এই নীতিমালা গৃহীত হয়েছে। এই নীতির আওতায়, যেসব দেশ পরিবেশের ব্যাপারে কম সচেতন, সেসব দেশ থেকে ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম ও সিমেন্টের মতো পণ্য আমদানি করলে বাড়তি কার্বন ট্যাক্স দিতে হবে।
সিবিএম এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয় ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে। তবে ২০২৬ সাল থেকে পুরোপুরি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক করে বলেছে, কার্বনভিত্তিক শুল্কের কারণে রপ্তানি ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। শুধু সিবিএম-এর কারণেই ২০৩০ সালের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে দেশটির রপ্তানি চার শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলেও জানানো হয়।