বাসস
  ২৮ মে ২০২৫, ২০:৪২

ইউক্রেনকে ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে জার্মানি

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা, ২৮ মে, ২০২৫ (বাসস): জার্মান সরকার ইউক্রেনকে নিজস্ব তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করবে। বুধবার বার্লিনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ এ কথা জানিয়েছেন।

বার্লিন থেকে সিনহুয়া এই খবর জানায়।

জার্মান চ্যান্সেলর বলেছেন, আজ আমাদের প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা ইউক্রেনের-নির্মিত দূরপাল্লার যুদ্ধ ব্যবস্থা সরবরাহের জন্য একটি স্মারকলিপি সই করবেন। আমরা আমাদের সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখব এবং এটি ভবিষ্যতে আরো জোরদার করব। যতদিন সময় লাগে জার্মানি ততদিন তা অব্যাহত রাখবে।

তিনি আরো বলেছেন, এটি শিল্প পর্যায়েও সহযোগিতা করবে, যা ইউক্রেন এবং জার্মানিতে উভয় ক্ষেত্রেই বাস্তবায়িত হতে পারে।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৌড়ঝাপের মধ্যে ইউরোপীয় দেশটির দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের মতো বিস্ফোরক সিদ্ধান্তের পর কী মস্কো বার্লিনে আক্রমণ করবে কি-না এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, মস্কো বারবার জার্মানিকে এই ধরনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সতর্ক করে আসছে।

যদিও যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিমারা ইতোমধ্যে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে। কিন্তু তা দিয়ে রুশ ভূখণ্ডে হামলা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি।

জার্মানির সিদ্ধান্তের পর বুধবার রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি’র প্রধান সম্পাদক মার্গারিটা সিমোনিয়ান সতর্ক করে বলেছেন, জার্মানি যদি ইউক্রেনকে জার্মান-সরবরাহকৃত ‘টরাস ক্ষেপণাস্ত্র’ দিয়ে রাশিয়াকে টার্গেট করতে সহায়তা করে, তবে বার্লিনে সরাসরি হামলার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেবে না মস্কো।

জার্মানির নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ইউক্রেনে শিগগিরই ‘টরাস ক্ষেপণাস্ত্র’ সরবরাহ করা হতে পারে। এটি ৫শ’ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এবং ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড থেকে রাশিয়ার রাজধানীতে পৌঁছাতে সক্ষম।

রুশ সম্পাদক সিমোনিয়ান বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য যদি কখনো ‘টরাস’ ব্যবহার করা হয়, তাহলে জার্মানি ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতে পারে। মস্কোর অফিসগুলোতে আলোচনা হচ্ছে, যদি জার্মান সেনারা জার্মান অস্ত্র দিয়ে মস্কোতে আক্রমণ করে তাহলে আমাদের কাছে একমাত্র বিকল্প থাকবে বার্লিনে আক্রমণ করা।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, মস্কোর ওপর ‘টরাস’ ক্ষেপণাস্ত্রের আক্রমণের জন্য জার্মান পরিষেবা সদস্যদের প্রস্তুত এবং কার্যকর করতে হবে। কারণ, ইউক্রেনীয়রা এই ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ করতে বা ফ্লাইট মিশনের জন্য এটি প্রোগ্রাম করতে পারে না।

এদিকে, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে জার্মান চ্যান্সেলরের মন্তব্যের জবাবে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ উল্লেখ করেছেন, যদি সত্যিই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তাহলে এটি ‘গুরুতর উত্তেজনা বৃদ্ধি ঘটাবে’ এবং ইউক্রেন সংঘাত নিরসনের বর্তমান প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

উল্লেখ্য, প্রাক্তন চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে পূর্ববর্তী জার্মান সরকার দীর্ঘদিন ধরে ইউক্রেনকে ‘টরাস ক্ষেপণাস্ত্র’ সরবরাহ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। তারা যুক্তি দিয়েছিল, এটি জার্মানিকে সরাসরি রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে ফেলবে।