শিরোনাম
ঢাকা, ১১ মে, ২০২৫ (বাসস): যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক ‘সম্পূর্ণ পুনর্গঠন’ হয়েছে। রোরবার জেনেভায় ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বিতীয় দিনের আলোচনার আগে এই মন্তব্য করেন তিনি। আলোচনার উদ্দেশ্য হলো ট্রাম্পের কঠোর শুল্ক আরোপের ফলে সৃষ্ট বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমিত করা। জেনেভা থেকে এএফপি এ সংবাদ জানিয়েছে।
রোববার সকালে ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প এই আলোচনাকে ‘খুব ভালো’ বন্ধুত্বপূর্ণ এবং গঠনমূলক প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ পুনর্গঠন বলে বর্ণনা করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট, ট্রেড প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার এবং চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রিমিয়ার হে লিফেং-এর মধ্যে এই দ্বিপাক্ষিক রুদ্ধদ্বার বৈঠকের দ্বিতীয় দিন সকালে পুনরায় শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
সিটি গ্রুপের গ্লোবাল চিফ ইকোনমিস্ট নাথান শিটস এএফপিকে বলেন, এই উচ্চ শুল্ক ব্যবস্থাকে উভয় পক্ষের জন্য ক্ষতিকর। কারণ এই আলোচনায় একটি বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে যে, অতিমাত্রায় উচ্চ শুল্ক আরোপের ফলে বাণিজ্য সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা যুক্তরাষ্ট্র বা চীন কোন পক্ষেরই স্বার্থে করা হয়নি।
গত মাসে ট্রাম্প চীনের উপর কঠোর শুল্ক আরোপ করার পর এই প্রথম বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মুখোমুখি বৈঠকে মিলিত হলেন। ট্রাম্পের শুল্কের জবাবে চীনও প্রবল শক্তিশালী পাল্টা ব্যবস্থা নেয়।
বছরের শুরু থেকে ট্রাম্প চীনের উপর মোট ১৪৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করেছেন, যা নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে ২৪৫ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে। পাল্টা জবাবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে কার্যত এক প্রকার বাণিজ্য অবরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
বৈঠকের আগেই ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে তিনি শুল্ক হ্রাস করতে পারেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘চীনের ওপর ৮০ শতাংশ শুল্কই সঠিক মনে হয়!’
তবে তার প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট পরে ব্যাখ্যা করেন যে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে শুল্ক কমাবে না, চীনকেও কিছু ছাড় দিতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ এক ধাপ:
আলোচনার প্রথম দিন শনিবার জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়। এটি একটি নিরিবিলি ভিলা যার আকাশি নীল জানালা এবং যা লেক জেনেভার পাশে একটি বড় পার্কের কাছে অবস্থিত।
বৈঠকে যাওয়ার আগে দুই পক্ষই বড় ধরনের অগ্রগতির আশা কমিয়ে দেন। মার্কিন অর্থমন্ত্রী বেসেন্ট বলেন, আলোচনার মূল লক্ষ্য ‘উত্তেজনা প্রশমন’, বড় কোনো বাণিজ্য চুক্তি নয়। অপরদিকে, বেইজিং জানিয়ে দেয় যে, যুক্তরাষ্ট্রকে আগে শুল্ক কমাতে হবে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ায় প্রকাশিত এক মতামতে এই আলোচনা ‘সমস্যার সমাধানে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকস (পিআইআইই)-এর জ্যেষ্ঠ ফেলো গ্যারি হাফবাউয়ার বলেন, ‘এই আলোচনার আয়োজনই করা হয়েছে ব্যবসা এবং আর্থিক বাজারের ভালো খবরের জন্য।’
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আমি বেশ সন্দিহান। এমনকি ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ শুল্ক হার থাকলেও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য অর্ধেকে নেমে আসতে পারে।