শিরোনাম
ঢাকা, ১০ মে, ২০২৫ (বাসস) : ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনা করতে শনিবার প্রথমবারের মতো একসঙ্গে কিয়েভ সফরে গেছেন ইউরোপীয় চার নেতা।
ইউরোপীয় এই চার নেতা হলেন- ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যের্ৎস, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।
যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
কিয়েভ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
এই সফরটি ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপের ঐক্য ও সমর্থনের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মস্কোতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিজয় দিবস উদ্যাপনের পরদিনই কিয়েভ সফরে গেলেন ইউরোপীয় নেতারা।
এই সফরকে বলা হচ্ছে নজিরবিহীন। কারণ আগে কখনও ইউরোপের চার দেশের শীর্ষ নেতা একসঙ্গে ইউক্রেন সফর করেননি। কয়েক দিন আগে দায়িত্ব নেওয়া ফ্রিডরিশ ম্যের্ৎসও প্রথমবারের মতো ইউক্রেন সফরে গেলেন। ম্যাখোঁ সর্বশেষ কিয়েভ সফর করেন ২০২২ সালের জুনে।
সফরের আগে এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় নেতারা বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংহতি জানিয়েরাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন পূর্ণাঙ্গ ও নিঃশর্তভাবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এতে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তিচুক্তির আলোচনার পথ খুলবে।
নেতারা বলেন, আমরা চাই রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ করুক। রক্তপাত বন্ধ হোক এবং ইউক্রেন যেন স্বাধীনভাবে তার দেশের ভবিষ্যৎ গড়তে পারে।
ইউরোপীয় নেতারা বলেন, তারা যুদ্ধবিরতির কারিগরি দিক নিয়ে আলোচনা জন্য প্রস্তুত এবং দ্রুত শান্তি চুক্তির দিকে এগুতে চান।
তবে রাশিয়া এখনও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলো অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ না করলে রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে যাবে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে রুশ সেনারা বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছে।
ইউরোপীয় নেতারা আরও বলেন, আমরা রাশিয়ার বর্বর ও অবৈধ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে থাকার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করছি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানিয়ে রাশিয়াকে স্থায়ী শান্তি অর্জনে বাধা দেওয়া বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
শনিবার জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর ইউরোপীয় নেতারা একটি ভার্চুয়াল সভা করবেন। যেখানে যুদ্ধ-পরবর্তী ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সম্ভাব্য একটি ইউরোপীয় বাহিনী গঠনের বিষয়ে আলোচনা হবে।
এদিকে শুক্রবার ফ্রান্সে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী টাস্কের সঙ্গে বৈঠকে ম্যাখোঁ বলেন, যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে দ্রুত পরিকল্পনা করতে হবে। কোনো পক্ষ তা ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে ‘কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা’ জারি করতে হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্টের এক কর্মকর্তার জানান, এই সফর ইউরোপের ঐক্য, শক্তি ও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সক্ষমতার প্রতীক। এটি পুতিনের উৎসব আয়োজনের পাল্টা জবাব।
এই সফরের ঠিক এক দিন আগেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মস্কোতে আয়োজন করেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান। সেখানেই তিনি স্বাগত জানান চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোকে।