শিরোনাম
ঢাকা, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : নেপালের সাবেক রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহ সাম্প্রতিক রাজতন্ত্রপন্থী সহিংস বিক্ষোভ নিয়ে প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছেন। ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিওবার্তায় তিনি সহিংসতায় দুঃখ প্রকাশ করলেও পরোক্ষভাবে আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
কাঠমান্ডু থেকে এএফপি জানায়, ২০০৮ সালে এক দশকের গৃহযুদ্ধের পর রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হলে জ্ঞানেন্দ্র শাহ নেপালের শেষ রাজা হিসেবে ক্ষমতা ছাড়েন। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা, দুর্নীতি ও ধীরগতির অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে জনগণের হতাশার মধ্য দিয়ে রাজতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি আবারও জোরালো হচ্ছে।
গত মার্চে এমনই একটি রাজতন্ত্রপন্থী সমাবেশে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এতে দুজন নিহত ও শতাধিক মানুষ গ্রেপ্তার হয়।
নেপালের ঐতিহ্যবাহী নববর্ষের প্রাক্কালে রোববার রাতে ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিওতে জ্ঞানেন্দ্র বলেন, 'মতপ্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলেও তা সংযমের সঙ্গে চর্চা করা উচিত।'
তিনি যোগ করেন, 'সম্প্রতি যে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর হয়েছে, এতে মানবিক ও বস্তুগত ক্ষয়ক্ষতির যে চিত্র আমরা দেখেছি, তা আমাদের গভীরভাবে মর্মাহত করেছে।'
তবে একইসঙ্গে তিনি নেপালি জনগণের মধ্যে দেশ ও ভবিষ্যৎ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বলেও মন্তব্য করেন।
জ্ঞানেন্দ্র বলেন, 'আমাদের বিশ্বাস সবসময়ই বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং জনগণের অনুভূতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের পক্ষে।'
২০০৮ সালের শান্তিচুক্তির অংশ হিসেবে নেপাল রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে প্রজাতান্ত্রিক ও ফেডারেল শাসনব্যবস্থা গ্রহণ করে। রাজনীতি নিয়ে সাধারণত নীরব থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবার জনসমাবেশে অংশ নিতে দেখা গেছে জ্ঞানেন্দ্রকে।
২০০১ সালে এক রাজপ্রাসাদ হত্যাকাণ্ডে বড় ভাই রাজা বীরেন্দ্র ও তার পরিবারের মৃত্যু হলে জ্ঞানেন্দ্র সিংহাসনে বসেন। সে সময় নেপালে মাওবাদী বিদ্রোহ জোরালো হয়ে উঠছিল।
২০০৫ সালে তিনি সংবিধান স্থগিত করে সংসদ বাতিল করলে দেশজুড়ে গণআন্দোলন শুরু হয়। মাওবাদীরাও তখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে একাত্ম হয়ে রাজপথে নেমে আসে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে পার্লামেন্ট ২৪০ বছরের পুরোনো হিন্দু রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।