বাসস
  ০২ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৫৪

গজনবী স্টেডিয়ামের আধুনিকায়নে উচ্ছসিত ভোলার ক্রীড়াপ্রেমীরা

ছবি : বাসস

ভোলা, ২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপজেলা ভোলার ক্রীড়াপ্রেমীদের হৃদয়ে বিশেষ স্থান ধরে রাখা গজনবী স্টেডিয়াম এখন নতুন রূপে সেজেছে। আধুনিক সুযোগ সুবিধা আর বিশাল অবকাঠামোর সমন্বয়ে এটি এখন ভোলার ক্রীড়াপ্রেমীদের তীর্থস্থানে পরিনত হচ্ছে।  

ভোলার গজনবী স্টেডিয়াম, যেটি শুধু একটি ক্রীড়া মঞ্চ-ই নয়, বরং এই দ্বীপ জেলার ক্রীড়াপ্রেমীদের স্বপ্নের প্রতীক হিসেবেও পরিচিত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যমতে, ১৯৬২ সালে প্রস্তাবিত এই স্টেডিয়ামের নির্মাণ শেষ হয় ১৯৯২-৯৩ সালে। জেলা তথা জাতীয় অঙ্গনের একসময়কার কৃতি ফুটবলার এস এম গজনবীর নামে নামকরণ করা এই স্টেডিয়াম এখন আধুনিকীকরণের মাধ্যমে নতুন যুগে পা রাখার অপেক্ষায়।

এক সময় জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে এখানে নিয়মিত কাবাডি, হ্যান্ডবল, ভলিবলের মতো প্রতিযোগিতার পাশাপাশি জাতীয় দিবসগুলোতে কুচকাওয়াজও অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০০৬ সালের আন্ত:জেলা ভলিবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল এই স্টেডিয়ামের ইতিহাসে এক স্মরণীয় মুহূর্ত ছিল।

প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ভোলা গজনবী স্টেডিয়ামের আধুনিকীকরণ, ইনডোর স্টেডিয়াম ও সুইমিং পুল নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় স্টেডিয়ামটি এখন ১৬ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার গ্যালারী আর ৩০০ জনের বিশেষ ভিআইপি গ্যালারি নিয়ে সেজে উঠেছে। নতুন মূল ভবনে রয়েছে অফিস কক্ষ, আধুনিক ড্রেসিং রুম, খেলোয়াড়দের আবাসন, ডাইনিং ও কনফারেন্স রুম। এছাড়া তৈরি হয়েছে নেট প্র্যাকটিস এরিয়া, বাস্কেটবল গ্রাউন্ড এবং একটি অত্যাধুনিক ইনডোর স্টেডিয়াম।

নিরাপত্তা ও দর্শকদের সুবিধার জন্য তৈরি হয়েছে ১২টি প্রশস্ত গেট। চারপাশের সৌন্দর্যবর্ধন এবং সুবিন্যাস্ত অবকাঠামো এই স্টেডিয়ামকে ভোলাবাসীর গর্বে পরিণত করেছে।

গজনবী স্টেডিয়াম এখন শুধু ভোলার ক্রীড়াঙ্গনের প্রাণকেন্দ্র নয়, এটি ভবিষ্যতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আয়োজনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমনটাই মনে করেন জেলার ক্রীড়াপ্রেমীরা।

এই স্টেডিয়ামে নিয়মিত ক্রিকেট অনুশীলণ করেন সিয়াম, সাদী ও তালহা। তারা বলেন, দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষিত গজনবী স্টেডিয়ামে আধুনিক অবকাঠামোগত উন্নয়নে সজ্জিত হওয়ায় আমরা আনন্দিত। ক্রিকেট প্র্যাক্টিস করতে আমাদের আর বিড়ম্বনা পোহাতে হবেনা। তারা বলেন, এখানে এখন জাতীয় পর্যায়ের প্রশিক্ষকরা অনায়াসেই জেলার তরুণ ক্রিকেটারদের প্রশিক্ষণ দিতে এগিয়ে আসবেন।

ভোলার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষও গজনবী স্টেডিয়ামের আধুনিকায়নে দারুণ খুশী। তারা বলছেন, তাদের ছেলেমেয়েরা আধুনিক এই স্টেডিয়ামের সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আগের থেকে সহজে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।  

ভোলা জেলা ক্রীড়া সাংস্থার সাবেক সাধারন সম্পাদক ইয়ারুল আলম লিটন বলেন, স্টেডিয়ামটির আধুনিকায়নের ফলে ভোলা তথা দক্ষিণাঞ্চলের খেলোয়াড়রা স্বাচ্ছন্দ্যে এখানে যেকোনো লীগ খেলার আয়োজন করতে পারবেন। জাতীয় পর্যায়ের যেকোন ক্রিকেট ও ফুটবল খেলাগুলো গজনবী স্টেডিয়ামে অনায়াসেই আয়োজন করা যাবে।

ভোলা জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো: মোস্তফা কামাল বলেন, একটি স্টেডিয়াম ও প্রশস্ত মাঠের অভাবে ভোলার ফুটবল খেলাগুলো দীর্ঘদিন যাবত স্থবির হয়ে ছিলো। বহুদিন পর হলেও গজনবী স্টেডিয়ামটি আধুনিকিকরন হওয়াতে সেই প্রতিবন্ধকতা আর থাকলোনা।

ভোলা জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা মো.সাফায়েত হোসাইন বাসস'কে জানান, আধুনিক এ স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করতে   কোটি টাকা ব্যায় হয়েছে। তিনি বলেন, স্টেডিয়ামটি নির্মাণের ফলে পিছিয়ে পড়া ভোলাবাসীর ক্রীড়াঙ্গন আবার পুনরুজ্জীবিত হবে।