শিরোনাম
ঢাকা, ২৭ মে, ২০২৫ (বাসস) : পর্যাপ্ত নীতিগত সহায়তা, বিনিয়োগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিত করা গেলে, দেশের হালকা প্রকৌশল খাত বিশাল অপ্রচলিত বিশ্ব বাজারে প্রবেশ ও ১০০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত রপ্তানি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আসন্ন বাংলাদেশ হালকা প্রকৌশল এক্সপো, ২০২৫ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতি (বাইশিমাস)-এর সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক একথা বলেন।
প্রকৌশল ও হালকা প্রকৌশল পণ্যের বৈশ্বিক বাজার ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের, যেখানে বাংলাদেশের অংশ ১ শতাংশেরও কম।
রাজ্জাক আরও বলেন, প্রকৌশল পণ্যের অভ্যন্তরীণ বাজার প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার, যেখানে তারা অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত পূরণ করতে পারে এবং বাকিটা আমদানির উপর নির্ভর করে।
বাংলাদেশ হালকা প্রকৌশল এক্সপো আগামী ২৯ ও ৩০ মে মিন্টো রোডের শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে। বাইশিমাস ও এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রকল্পের (বাণিজ্য মন্ত্রণালয়) যৌথ উদ্যোগে এক্সপোটি অনুষ্ঠিত হবে।
দুই দিনের এই অনুষ্ঠানে, শীর্ষ স্থানীয় দেশীয় হালকা প্রকৌশল কোম্পানিগুলো তাদের সর্বশেষ প্রযুক্তি, উপাদান ও উদ্ভাবনী পণ্য প্রদর্শন করবে।
অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলো তাদের পণ্য ও পরিষেবা উপস্থাপন করতে পারে, যা তাদেরকে নতুন ক্রেতা ও সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সহযোগিতা করবে।
মো. আব্দুর রাজ্জাক জাতীয় অর্থনীতিতে বাংলাদেশের হালকা প্রকৌশল খাতের উল্লেখযোগ্য অবদান তুলে ধরেন।
তিনি আরো বলেন, এই খাত ৩ লাখেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে দেশের জিডিপিতে প্রায় ৩ শতাংশ অবদান রাখে।
তিনি বলেন, ‘এই খাতটি বার্ষিক ৭৯৫ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের পণ্য রপ্তানি করে, যা অর্থনৈতিক বৈচিত্র্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’
আগামী ২৯ মে দুপুর ৩টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুবুর রহমান এক্সপোটির উদ্বোধন করবেন।
ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান ও এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রহিম খান বিশেষ অতিথি হিসেবে এতে উপস্থিত থাকবেন।
বিইআইওএ সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক এতে স্বাগত বক্তব্য রাখবেন।
এক্সপোতে, দেশের নির্বাচিত কোম্পানিগুলো তাদের পণ্য প্রদর্শন করবে। এর মধ্যে রয়েছে- রঞ্জক ও ছাঁচ, শিল্প যন্ত্রাংশ, কৃষি সরঞ্জাম, ধাতু ঢালাই ও বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম।
আন্তর্জাতিক বাজারে হালকা প্রকৌশল খাতের প্রতিযোগিতামূলকতা ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধির জন্য রাজ্জাক ভিয়েতনাম, চীন ও ভারতের মতো প্রতিযোগী দেশগুলোর মতো প্রণোদনা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, কাঁচামালের ওপর শুল্ক হ্রাস, নগদ প্রণোদনা ও এই খাতের জন্য ব্যাংক ঋণের অগ্রাধিকার প্রদান শিল্প প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে।
তিনি প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ অর্জনের জন্য প্রযুক্তি হস্তান্তর, আধুনিক নকশা উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের গুরুত্বের ওপর অধিকতর জোর দেন।
রাজ্জাক স্থানীয়ভাবে তৈরি উপাদান ও নকশা রক্ষার জন্য একটি সহজ ও কার্যকর পেটেন্ট নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এক্সপোতে ২৭টি দেশীয় কোম্পানির ৪৪টি স্টল থাকবে বলে তিনি জানান।
এই সেক্টরের উন্নয়নে কমপ্লায়েন্স শিল্প এলাকা গঠন, পণ্য বহুমুখীকরণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর, কাঁচামাল আমাদনিতে শুল্ক হ্রাস, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা, পেটেন্ট ও ডিজিইন সুরক্ষা, নারী, যুব শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়ন ও রপ্তানিতে নগদ সহায়তার দাবি করেন উদ্যোক্তারা।
সংবাদ সম্মেলনে এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রহমান বলেন, মার্কেট লিংকেজ, উদ্যোক্তাদের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি।
এক্সপোটি সাধারণত মার্কেট লিংকেজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।