শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে সোমবার দ্বিতীয় দিনে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৯ জেলার ২০টি আসনের সীমানা নিয়ে ৫১৩টি দাবি আপত্তির ওপর শুনানি গ্রহণ করে তা নিষ্পত্তি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের অডিটোরিয়ামে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে এই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব অংশ নিয়েছেন।
শুনানিতে আবেদনকারীরা বাগেরহাটের ৪টি আসন বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া বরগুনা ও পিরোজপুর জেলায় একটি করে সংসদীয় আসন বৃদ্ধি করার দাবি জানান এলাকাবাসী। অপরদিকে তিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৮টি করার দাবি জানান আবেদনকারীরা।
ইসিতে শুনানি শেষে ব্রিফিংয়ে বাগেরহাট-৩ আসনের প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট ওয়াহিদুজ্জামান দিপু বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে বাগেরহাটে চারটি আসন। হঠাৎ করে ইসি আমাদের বলেছেন চারটি আসন থাকবে না। একটি আসন বাদ দেওয়া বাগেরহাটবাসী মানে না। এটা অযৌক্তিক আইন পরিপন্থি এবং বাস্তবসম্মত নয়। ইসির এ সিদ্ধান্ত জনস্বার্থের পরিপন্থি। তিনি দাবি করেন, বাগেরহাট জেলায় চারটি আসন আগের মত বহাল থাকবে। এ বিষয়ে ইসি যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবে।’
একই আসনের প্রতিনিধি ব্যারিস্টার শেখ মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন সেই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। তারা সেটা না দিয়ে বাগেরহাটের জনগণের যে চারটি আসন ছিল, সেখান থেকে একটি আসন কমিয়েছে। আসন কমিয়ে বাগেরহাটবাসীর যে অধিকার সে অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিট বিরোধী কাজ করছে ইসি। আমাদেরকে আন্দোলন সংগ্রামের দিকে ঠেলে দেবেন না বা আমাদেরকে আদালতের দিকে ঠেলে দিবেন না।’
অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান বলেন, ‘কোনো ধরনের গণশুনানি না করে ইসির এ ধরনের সিদ্ধান্ত বৈষম্যমূলক। ইসি উপযুক্ত সিদ্ধান্ত না দিলে আমরা আইনি পথে যাব।’
বাগেরহাটে আগে চারটি আসন ছিল- বাগেরহাট-১ (মোল্লারহাট-ফকিরহাট-চিতলমারী); বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া); বাগেরহাট-৩ (রামপাল ও মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা)। এবার বাগেরহাট-১ আগের মতো বহাল রাখা হয়েছে। বাগেরহাট সদর, কচুয়া, রামপাল নিয়ে বাগেরহাট-২ আসন এবং মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলা নিয়ে বাগেরহাট-৩ প্রস্তাব করা হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে সাতক্ষীরা-৩, ৪ ও যশোর-৩, ৬ আসনের দাবি আপত্তির ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দুপুর ২টা পর্যন্ত বাগেরহাট- ১, ২ ও ৩ আসনের বিষয়ে শুনানি হয়।
শুনানিতে সংসদীয় আসনের পুনঃনির্ধারিত সীমানার বিষয়ে দাবি ও আপত্তি নিয়ে আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবীরা শুনানি করেন। এছাড়া আবেদনকারীরা নিজেরাও শুনানি করেন। দাবি ও আপত্তি বিষয়ে ইসি উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেন এবং আইন ও বিধি অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন।
সোমবার দুপুর আড়াইটা থেকে ৫টা পর্যন্ত ঝালকাঠি-১, বরগুনা-১, ২, পিরোজপুর-১, ২, ৩, চট্টগ্রাম-৩, ৫, ৮, ১৯, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান আসন নিয়ে দাবি-আপত্তির ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
শুনানিতে আবেদনকারীরা বরগুনা ও পিরোজপুর জেলায় একটি আসন বৃদ্ধি করার দাবি জানান। এছাড়া খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান এই তিন জেলার আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৮টি করার দাবি জানান।
এর আগে রোববার প্রথম দিনে কুমিল্লা অঞ্চলের ৬টি জেলার ১৮টি সংসদীয় আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার বিষয়ে দাবি ও আপত্তি নিষ্পত্তি করেছে ইসি।