শিরোনাম
ঢাকা, ১৪ মে, ২০২৫ (বাসস) : বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে জাম্বিয়ার কনস্যুলেট উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জাম্বিয়া-বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম-ঢাকা’ অনুষ্ঠানে কনস্যুলেটটি উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশের রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি), জাম্বিয়ার মিনিস্ট্রি অব কমার্স, ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রি ও জাম্বিয়া ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (জেডডিএ) যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশে জাম্বিয়ার কনস্যুলেট, নয়াদিল্লিতে জাম্বিয়ার হাইকমিশন, জাম্বিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশন (অনাবাসী) সহযোগিতা করেছে।
অনুষ্ঠানে ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, জাম্বিয়ার মিনিস্ট্রি অব কমার্স, ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন বিষয়ক স্থায়ী সচিব ক্রুসিভিয়া সি. হিচিকুম্বা, ভারতে জাম্বিয়ার হাইকমিশনার পার্সি চান্দা, এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুশফিকুর রহমান এবং বাংলাদেশে জাম্বিয়ার কনসাল ড. মোহাম্মদ জায়েদ আলম বক্তব্য দেন।
ইপিবি পরিচালক (পলিসি এন্ড প্ল্যানিং) আবু মোখলেছ আলমগীর হোসেন ও বাংলাদেশে জাম্বিয়ার কনস্যুলেট অফিসের কূটনৈতিক কর্মকর্তা (অ্যাটাচি) ইসা মাইনুদ্দিন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, বাংলাদেশ যখন একটি প্রতিযোগিতামূলক ও স্থিতিশীল রপ্তানি-চালিত অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে, তখন আফ্রিকার সঙ্গে, বিশেষ করে জাম্বিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ততা নতুন সুযোগের দ্বার উন্মোচন করেছে।
তিনি বলেন, জাম্বিয়া কৌশলগতভাবে দক্ষিণ ও মধ্য আফ্রিকার বেশ কয়েকটি প্রতিবেশী বাজারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসেবে অবস্থিত, যার মধ্যে আরও তিনটি দেশ কঙ্গো, মালাউই এবং জিম্বাবুয়ে রয়েছে। সেখানে জাম্বিয়া একটি বাণিজ্য করিডোর হিসেবে কাজ করে।
তিনি আরও বলেন, এই সংযোগগুলো জাম্বিয়াকে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য একটি কৌশলগত অ্যাক্সেস পয়েন্ট করে তুলেছে। তাই এ ফোরাম কেবল জাম্বিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করারই সুযোগ নয়, বরং একটি বৃহত্তর আঞ্চলিক অর্থনৈতিক করিডোরের প্রবেশদ্বারও বটে।
ক্রুসিভিয়া সি. হিচিকুম্বা বলেন, এই ব্যবসায়িক ফোরাম জাম্বিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার সামনের ক্যাটালগটি কেবল জাম্বিয়ার ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশই প্রদর্শন করে না, বরং এটি জাম্বিয়ার প্রতিপক্ষের সঙ্গে অর্থপূর্ণ অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী বাংলাদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি ব্যবহারিক উপাদান।
হিচিকুম্বা বলেন, এই ফোরাম শিল্পপতিদের সহযোগিতামূলক সুযোগগুলো অন্বেষণ করতে সক্ষম করছে, বিশেষ করে কৃষি, পর্যটন, উৎপাদন এবং মূল্য সংযোজন পণ্যের অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোতে।
তিনি আরও বলেন, একটি দেশ হিসেবে আমরা বাণিজ্য সুবিধা, অন্তর্ভুক্তি ও বাজারে প্রবেশাধিকারের মাধ্যমে একটি বৈচিত্র্যময়, উদ্ভাবনী ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক শিল্প ভিত্তিসহ একটি শিল্পোন্নত জাতিতে পরিণত হতে চাই।
জাম্বিয়ার এই বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন বিষয়ক সচিব বলেন, পোশাক, বস্ত্র, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের পাশাপাশি ওষুধ পণ্যে বাংলাদেশের প্রমাণিত দক্ষতা জাম্বিয়ার প্রবৃদ্ধির গতিপথকে পুরোপুরি পরিপূরক করবে।
তিনি বলেন, সমন্বিত খাতে স্বার্থের পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা আমাদের দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধির বিশাল সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। তাই আমরা পারস্পরিক সুবিধার জন্য সম্ভাব্য অংশীদারিত্ব অন্বেষণ করতে অত্যন্ত আগ্রহী।
তিনি বাংলাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই প্ল্যাটফর্মটি (ফোরাম) ব্যবহার করতে এবং জাম্বিয়ার উদ্যোগগুলোর সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য উৎসাহিত করেন।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, আজকের এ ফোরাম জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, ব্যবসায়িক মেলবন্ধন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং এসএমই খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির জন্য একটি সময়োপযোগী সুযোগ তৈরি করছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এর মাধ্যমে পোশাক, কৃষি-প্রক্রিয়াকরণ, প্লাস্টিক পণ্য, হালকা প্রকৌশল, নবায়নযোগ্য শক্তি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং নারী উদ্যোগের মতো ক্ষেত্রগুলোতে সমন্বয়ের জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে।