শিরোনাম
ঢাকা, ১৩ মে, ২০২৫ (বাসস) : আগামী অর্থবছরের বাজেটে দেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে নীতি সহায়তা প্রয়োজন। এসএমই ফাউন্ডেশন ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপি’তে এসএমই খাতের অবদান ৩৫ শতাংশে উন্নীত করার ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। এ লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এসএমই ফাউন্ডেশন’র চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমান আজ মঙ্গলবার অর্থনৈতিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত ‘এসএমই-বান্ধব বাজেট প্রস্তাবনা ২০২৫-২৬’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) বাজেটকে সামনে রেখে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিকস ও অনলাইন মিডিয়ার অর্থনৈতিক বিটের রিপোর্টারদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্যই এসএমই ফাউন্ডেশন ইআরএফ’র সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এসএমই ফাউন্ডেশন’র চেয়ারপার্সন বলেন- আগামী অর্থবছরের (২০২৫-২৬) বাজেটে দেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে নীতি সহায়তা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে সদ্য বিলুপ্ত জাতীয় রাজস্ব বোর্ড’র (এনবিআর) কাছে ইতোমধ্যে ১৪০টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশন ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপি’তে এসএমই খাতের অবদান ৩৫ শতাংশে উন্নীত করার ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। এ লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
মুসফিকুর রহমান দেশের এসএমই খাতের উন্নয়নে আরো বেশি উদ্যোক্তাকে ঋণের আওতায় আনা, এসএমই নীতিমালা-২০২৫ বাস্তবায়ন এবং এসএমই খাত ও উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতি অর্থবছরের বাজেটে এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে নিয়মিত অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।
এসএমই ফাউন্ডেশন’র চেয়ারপার্সন মনে করেন, আগামী অর্থবছরের বাজেটে এসএমই ফাউন্ডেশনের অনুকূলে অন্তত: পক্ষে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া উচিত। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ৫০০ কোটি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ইআরএফ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী এবং ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও বিপিজিএমইএ সভাপতি সামিম আহমেদ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন। এ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইআরএফ’র সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ মোরশেদ আলম।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে সিএমএসএমই খাতের অবদান উন্নত দেশগুলো এমনকি প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায়ও অনেক কম। পাকিস্তানে এই হার ৪০ শতাংশ, শ্রীলংকায় ৫২ শতাংশ, চীনে ৬০ শতাংশ, ভারতে ৩৭শতাংশ।
বাংলাদেশে এই হার প্রত্যাশার তুলনায় খুবই কম এ কথা উল্লেথ করে তিনি বলেন, ২০১৩ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশের সিএমএসএমই খাতে উদ্যোক্তার সংখ্যা ৭৮ লাখ ১৩ হাজারের বেশি।
এ সময় আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, চব্বিশ’র জুলাই বিপ্লবের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এসএমই নীতিমালা ২০২৫-’কে ঘিরে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। এসব উদ্যোক্তারা আশা করছেন, এই নীতিমালা শতভাগ বাস্তবায়নে সরকার এসএমই ফাউন্ডেশনসহ বাস্তবায়ন সহযোগী মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর অনুকূলে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ প্রদান দিবে, যা শতভাগ শ্রমঘন এই খাতকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মূল প্রবন্ধে এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এসএমই-বান্ধব (ট্যাক্স, ভ্যাট ও ট্যারিফ সংক্রান্ত) প্রস্তাব তৈরির লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ৩৪টি অ্যাসোসিয়েশন এবং পাঁচটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাঁচটি পরামর্শ সভা এবং একটি কর্মশালা আয়োজন করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৩শ’র অধিক প্রস্তাব পাওয়া গেছে। তাদের প্রস্তাবনা পর্যালোচনাপূর্বক মূসক সংক্রান্ত ৩১টি, আয়কর সংক্রান্ত ৩৫টি এবং শুল্ক সংক্রান্ত ৬৭টিসহ প্রায় ১৪০টি প্রস্তাব চূড়ান্ত করে সদ্য বিলুপ্ত এনবিআর বরাবর দাখিল করা হয়েছে।