বাসস
  ০৬ মে ২০২৫, ১৪:১১

এডিবি’র সঙ্গে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব জোরদারে প্রস্তাব বাংলাদেশের

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি

ঢাকা, ৬ মে, ২০২৫ (বাসস): ডিজিটাল রূপান্তর, জলবায়ু সহনশীলতা এবং আঞ্চলিক সংহতির গুরুত্ব তুলে ধরে উন্নয়ন সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। গতকাল মিলানে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৫৮তম বার্ষিক সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এডিবি সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন অর্থ উপদেষ্টা। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকীসহ অন্যান্য সদস্যগণ।

এডিবি সভাপতি মাসাতো কান্দা ও অন্যান্য প্রতিনিধিদের উদ্দেশে ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, “নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের পথে ঐতিহাসিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “সংকটময় এ সময়ে অর্থায়নের পাশপাশি কাঠামোগত সংস্কার ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা তৈরিতেও এডিবির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।”

এসময় বাংলাদেশের প্রস্তাবিত চারটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র তুলে ধরেন উপদেষ্টা। প্রথমটি হলো, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি। এর মাধ্যমে ডিজিটাল অবকাঠামো, ই-গভর্ন্যান্স এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রসারে সমর্থনের অনুরোধ জানানো হয়। দ্বিতীয়টি হল, জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা। এ প্রস্তাবনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি ও উপকূলীয় টেকসই ব্যবস্থাপনায় সহজ শর্তে অর্থায়নের আহ্বান জানান অর্থ উপদেষ্টা। এরপর দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সীমান্ত পারাপার বাণিজ্য, জ্বালানি সংযোগ এবং মূল্য শৃঙ্খল জোরদার করতে অংশীদারিত্বের প্রস্তাব দেন। সবশেষে উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য সহায়ক অর্থায়ন ও উদ্ভাবনী অর্থনৈতিক পন্থায় প্রবেশাধিকার বাড়ানোর আহ্বান জানান ড. সালেহ উদ্দিন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “মুদ্রাস্ফীতি, জলবায়ু বিপর্যয় ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মতো বৈশ্বিক ঝুঁকিতে বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য একক প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। এজন্য প্রয়োজন সম্মিলিত ও সাহসী অংশীদারত্ব।”

এদিকে গতকাল বিকেলে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) প্রতিনিধিরা। দেশটি বাংলাদেশের মূল উন্নয়ন অগ্রাধিকারে সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের ২০২২ সালের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কৌশল অনুযায়ী, তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানি, বাণিজ্য, জলবায়ু অর্থায়ন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) উন্নয়ন, ডিজিটাল গভর্ন্যান্স এবং শিক্ষা খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সবুজ বিনিয়োগ, কারিগরি প্রশিক্ষণ, নদী পুনরুদ্ধার, বেসরকারি খাত উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত সহায়তা, স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনা, সাইবার নিরাপত্তা ও যৌথ গবেষণা উদ্যোগে সহায়তা চাওয়া হয়।

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশকে প্রায় ৩.১৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উন্নয়ন সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। যার বেশির ভাগই দারিদ্র্য দূরীকরণ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনুদান হিসেবে দেওয়া।